www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

May 7, 2024 11:55 pm
krishna

পূজার পদ্ধতি: জন্মাষ্টমীর দিন মধ্যরাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রথমে কাঁচা দুধ দিয়ে এবং তার পর পবিত্র জলে স্নান করানো হয়। এর পর একে একে দই দিয়ে, ঘি দিয়ে এবং সবশেষে মধু এবং গুঁড়ো করা চিনি দিয়ে স্নান করে প্রতিবারেই আবার বিশুদ্ধ জলে তা ধুয়ে ফেলা হয়। স্নান পর্বের পর প্রভুকে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে হলুদ কাপড় পরিয়ে রোলি বা জাফরানের তিলক দিয়ে সাজানো হয়। এর পর মালা দিয়ে বন্দনা করে গান এবং স্তোত্র গাওয়া এবং তার পর ফলমূল এবং ভোগ নিবেদনের পর আরতি করা হয়।

ভগবান বিষ্ণুর এক মহান অবতার শ্রীকৃষ্ণ। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে মধ্যরাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল মথুরার কারাগারে। তাঁর মা দেবকী এবং বাবা বাসুদেব মামা কংসের কারাগারে বন্দি ছিলেন। তিনি বৃন্দাবনে পালক মা যশোদা এবং বাবা নন্দের ঘরে বড় হন। জন্মাষ্টমীর পুণ্য লগ্নে সারা ভারতে মধ্যরাতে শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন পালিত হয়।এই শুভ দিনে ভক্তরা সারাদিন উপবাসের পর মধ্যরাতে পূজার মাধ্যমে উপবাস ভঙ্গ করেন।

যে ভাবে পুজো করবেন

জন্মাষ্টমীর (Janmasthami) আগের দিন নিরমিষ অন্ন খেয়ে সংযম পালন করতে হবে এবং রাত ১২টার মধ্যে খেয়ে নিতে হবে। ঘুমনোর আগে অবশ্যই ভাল করে মুখ ধুয়ে ঘুমতে হবে। জন্মাষ্টমীর দিন সকাল থেকে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত উপবাস এবং জাগরণ। উপবাস থেকে হরিনাম জপ, কৃষ্ণ লীলা শ্রবণ, ভগবানকে দর্শন, ভক্ত সঙ্গে হরিনাম কীর্তন, অভিষেক দর্শন করতে হবে এবং ভগবানকে অভিষেক করে একাদশীর দিনের মতো অনুকল্প প্রসাদ সেবন করতে হবে।

পুজোর নিয়ম : জন্মাষ্টমী (Janmashtami 2023) ব্রত পালনের জন্য উপকরণ হিসেবে ফুল, আতপ চাল, ফলের নৈবেদ্য, ফুল, তুলসীপাতা, দূর্বা, ধূপ, দীপ, পঞ্চগব্য, পঞ্চগুড়ি, পাট, বালি, পঞ্চবর্ণের গুড়ো, মধু পর্কের বাটি, আসন-অঙ্গুরী সংগ্রহ করতে হয়। এইদিনে উপবাসে থেকে উপকরণগুলি দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পূজা করতে হয়। একটি শান্ত ও কোলাহল মুক্ত স্থান প্রয়োজন। স্থানটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখতে হবে এবং পুজোর জন্য স্নান সেরে রাখুন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি ছবি অথবা মূর্তির সঙ্গে গণেশ মূর্তিও স্থাপন করা হয়ে থাকে। পাশে রাখতে হবে প্রদীপ ৷ মিষ্টি, ফল ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী থালায় সাজিয়ে রাখতে হবে।

মাথায় রাখবেন গোপালের (Sri Krishna) প্রিয় খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে মাখন মিছরি, ননী,নাড়ু, তালের বড়া,ক্ষীর, রাবরি, মালাই , মালপোয়া ইত্যাদি, যা সাজিয়ে গোপালের সামনে ভোগ হিসেবে নিবেদন করতে পারেন৷ প্রথমে শ্রী গণেশের প্রার্থনা (ওম শ্রী গণেশায় নমহা) (Sri Ganesha) করতে হবে ৷ এরপর কিছুক্ষণ ধ্যান করতে হবে মন যাতে শান্ত থাকে। প্রদীপ জ্বালাতে হবে। শ্রীকৃষ্ণের প্রার্থনা (‘ওম নমঃ ভাগবতে বাসুদেবায়’)করতে হবে। এরপর ফুল অর্পন করতে হবে। তুলসি পাতা থাকলে ভাল হয়। তাছাড়া ধূপ জ্বালাতে হবে। ফুল অর্পন করার সময় ঘন্টা বাজানোর রেওয়াজ আছে। ‘ওম নমঃ ভাগবতে বাসুদেবায়’ উচ্চারন করে যেতে হবে। এরপর ফল, মিষ্টি এবং অন্যান্য খাদ্য অর্পন করতে হবে। প্রার্থনা শেষে কিছুটা জল ছিটিয়ে দিতে হবে। কৃষ্ণ ভগবানের এই মন্ত্র বেশ কয়েকবার মনে মনে উচ্চারন করা যেতে পারে। এরপর ফল,মিষ্টি ও অন্যান্য খাদ্য প্রসাদ হিসাবে সবাইকে বিতরণ করতে হবে। পুজো শেষে ভগবত গীতা পাঠ করা হয়ে থাকে।

জন্মাষ্টমীর পূজার নিয়মাবলী

শ্রীকৃষ্ণের পূজার্চ্চনা পদ্ধতি: (Krishna)
(মন্ত্রপাঠ সহ পূজা)
হাতের তালুতে দু-এক ফোঁটা জল নিয়ে ‘ওঁ বিষ্ণু’ মন্ত্রে পান করবেন। মোট তিন বার এইভাবে জল পান করতে হবে। তারপর করজোড়ে বলবেন—
ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্।
ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোঽপি বা।
যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ।।

জল শুদ্ধি:
ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতি। নর্মদে সিন্ধু-কাবেরি জলেঽস্মিন সন্নিধিং কুরু ।।
পুষ্প শুদ্ধি:
পুষ্পে পুষ্পে মহা পুষ্পে সুপুষ্পে পুস্পসম্ভবে
পুষ্পোহী চায়াব কীর্ণে চ হুং ফট স্বাহা।।
আসন শুদ্ধি:
যে আসনে বসিয়া পূজা করিবে, তাহার নিম্নে ত্রিকোণ মণ্ডল লিখিয়া আসনের উপর একটি পুষ্প দিয়া পাঠ করিবে, এতে গন্ধপুষ্পে ওঁহ্রীঁ আধার শক্তি-কমলাসনায় নমঃ।
তৎপরে আসন ধরিয়া পাঠ করিবে, – আসনমন্ত্রস্য মেরুপৃষ্ঠঋষিঃ সুতলং ছন্দঃ কুর্ম্মো দেবতা আসনোপবেশনে বিনিয়োগঃ।
অনন্তর হাত জোড় করিয়া পাঠ করিবে, – ওঁ পৃথ্বি ত্বয়া ধৃতা লোকাদেবি ত্ত্বং বিষ্ণুনা ধৃতা। ত্বঞ্চ ধারয় মাং নিত্যং পবিত্রং কুরু চাসনম্।
তারপর পবিত্র বাদ্য ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে স্বস্তিবাচন করবেন—
ওঁ কর্তব্যেঽস্মিন্ শ্রীশিবপূজাকর্মণি ওঁ পূণ্যাহং ভবন্তো ব্রুবন্তু।
ওঁ পূণ্যাহং ওঁ পূণ্যাহং ওঁ পূণ্যাহং।
ওঁ কর্তব্যেঽস্মিন্ শ্রীশিবপূজাকর্মণি ওঁ স্বস্তি ভবন্তো ব্রুবন্তু।
ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি।
ওঁ কর্তব্যেঽস্মিন্ শ্রীশিবপূজাকর্মণি ওঁ ঋদ্ধিং ভবন্তো ব্রুবন্তু।
ওঁ ঋদ্ধতাম্ ওঁ ঋদ্ধতাম্ ওঁ ঋদ্ধতাম্।
ওঁ স্বস্তি ন ইন্দ্রো বৃদ্ধশ্রবাঃ স্বস্তি নঃ পূষা বিশ্ববেদাঃ।
স্বস্তি নস্তার্ক্ষ্যো অরিষ্টনেমিঃ স্বস্তি নো বৃহস্পতির্দধাতু।
ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি।
এরপর হাত জোড় করে বলবেন—
ওঁ সূর্যঃ সোমো যমঃ কালঃ সন্ধ্যে ভূতান্যহঃ ক্ষপা।
পবনো দিক্পতির্ভূমিরাকাশং খচরামরাঃ।
ব্রাহ্মং শাসনমাস্থায় কল্পধ্বমিহ সন্নিধিম্।।
এরপর জলশুদ্ধি করে নেবেন। জলশুদ্ধির মাধ্যমে সূর্যমণ্ডল থেকে সকল তীর্থকে জলে আহ্বান করে জলকে পবিত্র করা হয়। তারপর সেই পবিত্র জলে পূজার কাজ হয়। ঠাকুরের সামনে নিজের বাঁ হাতের কাছে কোশা রেখে তাতে জল দেবেন। সেই জলে আলতো করে ডান হাতের মধ্যমা আঙুল ঠেকিয়ে (নখ যেন না ঠেকে) বলবেন— ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতি। নর্মদে সিন্ধু-কাবেরি জলেঽস্মিন সন্নিধিং কুরু। তারপর সেই জলে একটা সচন্দনফুল দিয়ে মনে মনে তীর্থদেবতাদের পূজা করবেন। এতে সকল তীর্থের পূজা করা হয়ে যায়। তীর্থপূজা সেরে নিয়ে সেই জল নিজের মাথায় একটু দেবেন। তারপর পূজার সকল দ্রব্যে ছিটিয়ে সব কিছু শুদ্ধ করে নেবেন। তারপর সূর্যের উদ্দ্যেশ্যে একটু জল শিবলিঙ্গে দেবেন। সূর্যকে জল দিয়ে সূর্যপ্রণাম করবেন—
ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্।
ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোঽস্মি দিবাকরম্।।
তারপর একে একে গণেশ, শ্রীগুরু, শিব, সূর্য, নারায়ণ, দুর্গা, নবগ্রহ, দশমহাবিদ্যা, দশাবতার, সর্বদেবদেবী ও আপনার ঠাকুরের আসনে অন্যান্য ঠাকুরদেবতা থাকলে তাঁদেরকে এবং আপনার ইষ্টদেবতাকে প্রত্যেককে একটি করে সচন্দন ফুল দিয়ে পূজা করবেন।

গনেশের প্রনামঃ (Ganesha)
ঔঁ একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদরং গজানন।
বিঘ্ননাশকরং দেবং হেরম্বং প্রণমাম্যহম্।
গুরু প্রনামঃ
ঔঁ অখণ্ডমণ্ডালাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্।
তৎপদং দশি‘তং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।১
অঞ্জানতিমিরান্ধস্য ঞ্জানাঞ্জন শলাকায়া।
চক্ষু রুল্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।২.
গুরু ব্রক্ষা গুরু বিষ্ণু গুরুদেবো মহেশ্বরঃ। গুরুঃ সাক্ষাৎ পরং ব্রক্ষ
তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।৩
শিবের প্রনাম মন্ত্রঃ– (siva)
ওঁ নমস্তভ্যঃ বিরূপাক্ষ নমস্তে দিব্যচক্ষুসে নমঃ ।
পিণাকহস্তায় বজ্রহস্তায় বৈ নমঃ ।।
নমত্রিশূলহস্তায় দন্ড পাশাংসিপাণয়ে ।
নমঃ স্ত্রৈলোক্যনাথায় ভূতানাং পতয়ে নমঃ ।।
ওঁ বানেশ্বরায় নরকার্ণবতারনায় , জ্ঞানপ্রদায় করুণাময়সাগরায় ।
কর্পূরকুন্ডবলেন্দুজটাধরায় , দারিদ্রদুঃখদহনায় নমঃ শিবায় ।।
ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে ।
নিবেদয়ানি চাত্মানংত্তৃংগতিপরমেশ্বরঃ ।।
দূগা প্রণামঃ (Maa Durga)
ওঁ জয়ন্তি,মঙ্গলা, কালী,ভদ্রকালী,কপালিনী।
দূর্গা,শিবা,ক্ষমা,ধাত্রি,স্বাহা স্বধা নমোহস্তুতে।।
নারায়ণের প্রনামঃ
নম ব্রহ্মণ্য দেবায় গো ব্রহ্মণ্য হিতায় চ।
জগদ্ধিতায় শ্রীকৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমো নমঃ ।।
সূর্যপ্রণাম:
ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্।
ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোঽস্মি দিবাকরম্।।

শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান:
(ক) বন্দে বৃন্দাবন গুরু কৃষ্ণ কমল লোচনম্ ।
পীতাম্বরং ঘণশ্যামং বনমালা বিভুষিতাম্ ।।
শ্যামং শান্তং দ্বিভুজং মুরলী ধরং ।
রচিতং তিলকং তালে বিভ্রতং মণ্ডলাকৃতিম্ ।।
তরুণাদিত্য-সঙ্কাশং-কুণ্ডলাভ্যাং বিরাজিতম্ ।
শ্রীধাম-সুধাম সুবল স্তোক কৃষ্ণার্জ্জুনাবৃতম ।।
গোপী বল্লভ মধ্যস্থং রাধিকা প্রাণ বল্লভম্ ।
(খ) ত্রিভঙ্গ ভঙ্গিমা রুপ বেণু রন্ধ্র কর পল্লাম্ ।
গোপী মণ্ডল মধ্যস্থং শোভিত শ্রীনন্দ নন্দনম্ ।।
শ্রীকৃষ্ণের বীজ মন্ত্র ও উপকরণ নিবেদন মন্ত্র-
মূল বীজ মন্ত্র- ক্লীঁ।
জপের বীজ মন্ত্র-ক্লীদ কৃর্ষ্ণায় স্বাহা । ক্লীঁ কৃষ্ণায় নমঃ ।
ক্লীঁ কৃষ্ণায় স্বাহা । ক্লীঁ কৃষ্ণায় গোবিন্দায় স্বাহা ।
ক্লীঁ কৃষ্ণায় গোবিন্দায় গোপীজন বল্লভায় স্বাহা । বল্লভায় স্বাহা ।

শ্রী কৃষ্ণের কাম গায়ত্রী-
ওঁ ক্লীঁ (নমঃ ক্লীঁ) কামদেবায় বিদ্মহে পুষ্প বানায় ধীমহি তন্নোহনঙ্গঃ প্রচোদয়াৎ ।
উপকরণ নিবেদন মন্ত্র- নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ ।(বা স্ব-কৃষ্ণ মন্ত্র)
শ্রীকৃষ্ণ মন্ত্র (বীজ মন্ত্র) ১০৮ বার জপ করিবেন ।

সপর্পন মন্ত্র- গুহ্যাতি গুহ্য গোপ্তাত্বং গৃহানাস্মৎ কৃতং জপং ।
সিদ্ধি ভবতু মে দেব ত্বৎ প্রসাদাৎ জনার্দন ।।
একটু জল হস্তে লইয়া-এতং জলং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় অর্পনমস্তু বলিয়া শ্রীকৃষ্ণের হস্তে দেওয়ার উদ্দেশ্যে জল অর্পন করিবেন ।
ক্ষমা প্রার্থনা- নমো যদক্ষরং মাত্রাহীনঞ্চ যদ্ ভবেৎ ।
পূর্ণং ভবতু ত্বং সর্বং ত্বং প্রসাদাৎ জনার্দ্দন ।।
মন্ত্রহীনং ক্রিয়াহীনং ভক্তিহীনং জনার্দ্দন ।
যৎ পূজিতং ময়াদেব পরিপূর্ণং তদস্তুমে ।।
প্রণাম মন্ত্র স্মরণ করিয়া শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম করিবেন ।
শ্রীকৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্রঃ-
হে কৃষ্ণ করুণা সিন্ধো দীন বন্ধো জগৎ পতে ।
গোপেশ গোপিকা- কান্ত রাঁধা কান্ত নমোহস্তু তে ।।
শ্রীকৃষ্ণের পূজার্চ্চনার নিয়ম-
ধ্যানানুরুপ মুর্তিতে শ্রীকৃষ্ণের পূজার্চ্চনাদি করিবেন । এই শ্রীকৃষ্ণের মূর্ত্তি- দ্বিভুজ, মেঘের ন্যায় শ্যামবর্ণ, ত্রিভঙ্গ । অর্থাৎ স্থান ত্রয়ে বক্র অ মোহনা-কৃতি বংশীধারী । বন-মালায় সুসজ্জিত ।
শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম করিবেন । পরে শ্রীকৃষ্ণের কাম গায়ত্রী পাঠ করিয়া উপকরণ নিবেদন করিবেন
প্রণাম মন্ত্র- বসুদেব সুতং দেবং কংসচানুরমর্দ্দনম্ ।
দেবকী পরমানন্দং কৃষ্ণং বন্দে জগদ্ গুরুম্ ।।
শ্রী কৃষ্ণের কাম গায়ত্রী-
ওঁ ক্লীঁ (নমঃ ক্লীঁ) কামদেবায় বিদ্মহে পুষ্প বানায় ধীমহি তন্নোহনঙ্গঃ প্রচোদয়াৎ ।
উপকরণ নিবেদন মন্ত্র- নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ ।(বা স্ব-কৃষ্ণ মন্ত্র)
শ্রীকৃষ্ণ মন্ত্র (বীজ মন্ত্র) ১০৮ বার জপ করিবেন ।
উপকরণ নিবেদন মন্ত্র- নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ ।(বা স্ব-কৃষ্ণ মন্ত্র)

শ্রীকৃষ্ণকে বসিবার জন্য আসন নিবেদন করিবেন ।
আসনঃ- ইদং আসনং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নিবেদয়ামি নমঃ, বলিয়া নিবেদন করিবেন ।
একটি সচন্দন পুষ্প হস্তে লইয়া শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান করিয়া প্রথম পুষ্পটি নিজ মস্তকে এবং দ্বিতীয় বার ধ্যান করিয়া আর একটি পুষ্প শ্রীকৃষ্ণের প্রতিছবি বা শ্রীমূর্ত্তির চরণে অর্পন করিবেন ।
শ্রীকৃষ্ণের পূজার উপকরণ নিবেদন-
জল- এতৎ পাদং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ বলিয়া পাদ পদ্মে জল নিবেদন করিবেন, দুইবার ।
শ্রীকৃষ্ণের কাম গায়ত্রী পাঠ করিয়া উপকরণ নিবেদন করিবেন ।
অর্ঘ্যঃ- এষ অর্ঘ্যং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ বলিয়া অর্ঘ্য নিবেদন করিবেন ।
আচমণঃ- ইদমাচমনীয় জলং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ বলিয়া জল নিবেদন করিবেন ।
চন্দনঃ- এষ গন্ধঃ নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ । চরণ দ্বয়ে দুইবার ও
পুষ্পঃ- এতৎ সচন্দন পুষ্পং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ দুইবার ও
মাল্যঃ- এতৎ সচন্দন পুষ্প মাল্যং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ ও
তুলসীঃ- তুলসী ইদং সচন্দন তুলসী পত্রং নমঃ কঈ শ্রী কৃষ্ণায় নমঃ বলিয়া । দুইটি বা আটটি তুলসী পত্র চিৎ করিয়া চরণদ্বয়ে নিবেদন করিবেন ।
ধুপঃ- এষ ধুপঃ নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নিবেদয়ামি নমঃ । ও
দীপঃ- এষ দীপঃ নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ বলিয়া নিবেদন করিবেন ।

শ্রী কৃষ্ণকে ভোগের সামগ্রী নিবেদন করিবেন –
আচমন- ইদমাচমনীয় জলং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ বলিয়া জল নিবেদন করিবেন । নৈবদ্যে ও পানীয় জলে তুলসী পত্র নিবেদন, তৎপর উভয় পাত্রে ১০ বার মূল মন্ত্র স্মরনান্তে নিবেদন করিবেন ।
নৈবদ্যঃ- “ইদং সঘৃত সোপকরণ আমান্নঃ নৈবেদ্যং নমঃ” ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ বা ইদং সঘৃত সোপকরণ অন্নব্যঞ্জন নৈবদ্যং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ বলিয়া নিবেদন অরিবেন ।
পানীয় জল- ইদং পানীয় জলং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ বলিয়া জল নিবেদন করিবেন । (ভোজনের পর আচমনীয় জল নিবেদন করিবেন ।)
আচমনঃ- ইদমাচমনীয় জলং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ বলিয়া জল নিবেদন করিবেন ।
তাম্বুল- এতৎ তাম্বুলং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ, বলিয়া দিবেন ।
আচমনঃ- ইদং পানীয় জলং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ বলিয়া জল নিবেদন করিবেন । আরতি ও আরতি কীর্ত্তনাদি করিবেন-
পূজা সমাপনের সময় হস্তে একটু জল লইয়া শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে চরণে জল অর্পন করিবেন ।
মন্ত্র যথা- “এতৎ পাদ্যং নমঃ ক্লীঁ শ্রীকৃষ্ণায় অর্পণমস্তু” বলিয়া হস্তের জল শ্রীকৃষ্ণের চরণের উদ্দেশ্যে অর্পণ করিবেন ।

শ্রীকৃষ্ণের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা- নমো যদক্ষরং মাত্রাহীনঞ্চ যদ্ ভবেৎ ।
পূর্ণং ভবতু ত্বং সর্বং ত্বং প্রসাদাৎ জনার্দ্দন ।।
মন্ত্রহীনং ক্রিয়াহীনং ভক্তিহীনং জনার্দ্দন ।
যৎ পূজিতং ময়াদেব পরিপূর্ণং তদস্তুমে ।।

শ্রীকৃষ্ণকে শয়নের জন্য শর্য্যা নিবেদন করিবেন । শর্য্যাকে গন্ধ ও পুষ্পাদি দিয়া সুসজ্জিত করিবেন ।
প্রণাম মন্ত্র স্মরণ করিয়া শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম করিবেন ।
শ্রীকৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্রঃ-
হে কৃষ্ণ করুণা সিন্ধো দীন বন্ধো জগৎ পতে ।
গোপেশ গোপিকা- কান্ত রাঁধা কান্ত নমোহস্তু তে ।।

শ্রীকৃষ্ণের প্রদক্ষিণ মন্ত্রঃ-
হা কৃষ্ণ রাধিকা কান্ত গোবিন্দ মধুসূধন ।
প্রদক্ষিণং করোমি ত্বাং করুনাং কুরু মাধব ।।
শ্রীগুরু দেবতা ও শ্রীকৃষ্ণের ডাইন পার্শ্ব দিয়া প্রদক্ষিণ মন্ত্র বলিতে বলিতে কর জোড়ে চারিবার প্রদক্ষিণ করিবেন । প্রতি ফিরে সন্মুখ হইলে কর জোড়ে প্রণাম করিবেন । শেষবার চরণে প্রণাম করিবেন । (প্রদক্ষিণ মন্ত্র বা হরি নাম করিতে করিতেও প্রদক্ষিণ করিতে পারিবেন ।)

শ্রীকৃষ্ণের নিকট প্রার্থনা-
হে গোবিন্দ আপনার আপার করুণার দয়ায় এই দুর্ল্লভ মানব জনম লাভ করিয়াছি, সংসার মায়া জালে আবদ্ধ হইয়া, এই ক্ষণস্থায়ী মানবজনম বিফলে হারাইয়াছি, হে গোবিন্দ আপনি অগতির গতি পতিত পাবন, নিজ গুণে কৃপা করিয়া পতিতকে আপনার চরণে স্মরণাপন্ন হওয়ার মত শক্তি প্রদান করুণ ।
শ্রীকৃষ্ণের চরণামৃত লওয়ার মন্ত্র-
ওঁ অকাল-মৃত্যু-হরণং সর্ব্ব ব্যাধি-বিনাশনং ।
কৃষ্ণ পাদোদকং পীত্বা শিরসা ধারয়াম্যহং ।।

জেনে নিন বিভিন্ন রাশির জাতকেরা এই জন্মাষ্টমীর ব্রত কী ভাবে পালন করবেন

মেষ: ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ পাবার জন্য মেষ রাশির জাতকরা ভগবানকে লাল চন্দনের তিলক দিন ও দুধের তৈরি লাল লাড্ডুর ভোগ দিন।এই দিন ব্রত রাখলে গমের তৈরি খাবার খাবেন না।

বৃষ: ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য ভগবানকে চন্দনের তিলক দিন ও পায়েস ভোগ দিন। এই দিন ব্রত রাখলে দই খাবেন না।

মিথুন: ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ পেতে মিথুন রাশির জাতকরা ভগবানকে মাখনার পায়েস ভোগ দিন। এই দিন ব্রত রাখলে গোমাতাকে সবুজ শাকপাতা ভোজন করান। কিন্তু নিজে সবুজ মুগ কড়াই খাবেন না।

কর্কট: ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ পাবার জন্য ভগবানকে মিষ্টি দুধের ভোগ দিন ও পিঁপড়েদের খাওয়ান। এই দিন ব্রত রাখলে দুধ ও দই খাবেন না।

সিংহ: আজ ভগবানকে লাল ফুলের মালা পরানো ও ফল ভোগ দিন। গোমাতাকে সবুজ শাক পাতা ভোজন করান। এই দিন ব্রত রাখলে গমের তৈরী খাবার খাবেন না।

কন্যা: বাঁকে বিহারীর আশির্বাদ পাবার জন্য পঞ্জীরীর ভোগ দিন। কোনও ক্ষুধার্ত মানুষকে ভোজন করান।এই দিন ব্রত রাখলে মুগ ডাল ও ফল খাবেন না।

তুলা: ভগবানের আশীর্বাদ পেতে পছন্দের সুগন্ধীর ভোগ দিন। দিনে উপবাস করুন। শুকনো ফল থেকে তৈরি খাবার এবং দই এড়িয়ে চলুন।

বৃশ্চিক: বাঁকা বিহারীর আশীর্বাদ পেতে লাল চন্দনের তিলক লাগিয়ে জাফরান দুধ নিবেদন করুন। সারা দিনে ব্রত পালন করুন এবং শুকনো ফল থেকে তৈরি মিষ্টি এড়িয়ে চলুন।

ধনু: আশীর্বাদ এবং শুভ ফল পাওয়ার জন্য ভগবানের বুন্দি লাড্ডু ভোগ দেওয়া উচিত। দিনে উপবাস রাখবেন। আজকের মতো ছোলা ময়দার জিনিস গ্রহণ করবেন না।

মকর: আজ ভগবানকে মাখন উপহার দিন। এই রাশির মানুষের কালো পোশাক পরা উচিত নয়। আজকের ব্রতপালনের সাথে তিলের তেল দিয়ে তৈরি জিনিস এড়িয়ে চলুন।

কুম্ভ: আজ ধৈর্যশীল সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কর্পূর দিয়ে প্রভুর আরতি করা উচিত। তিলের তেল দিয়ে তৈরি জিনিস খাবেন না।

মীন: ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ পেতে জাফরান এবং জাফরান বরফি মিশ্রিত দুধ নিবেদন করুন। আজ হলুদ পোশাক পরা উচিত। এই দিনে ব্রতপালনের সাথে সাথে ছোলা ও ময়দার জিনিস ছেড়ে দিন।

(Collected)

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *