অশোক ষষ্ঠীর বিবরণ ভবগত পুরাণে
অশোক ষষ্ঠী। দেবীভাগবত পুরানে নবম স্কন্ধের একটি শ্লোকে বলা হয়েছে- “ষষ্ঠাংশা প্রকৃতের্যে চ সা চ ষষ্ঠী প্রকীর্তিতা /বালকানামধিষ্ঠাত্রী বিষ্ণুমায়া চ বালদা।” অর্থাৎ – বালকগণের অধিষ্ঠাত্রী দেবী, বালকদায়িনী বিষ্ণুমায়া প্রকৃতির ষষ্ঠকলা , এই জন্য ষষ্ঠী নামে কীর্তিত হয়েছেন। মা ষষ্ঠী ভগবতীর একটি রূপ। যিঁনি দুর্গা তিঁনিই ষষ্ঠী। ষষ্ঠী দেবীর বাহন মার্জার। এবং তাঁর হস্তে বর মুদ্রা ও ক্রোড়ে শিশু থাকে।
বাসন্তীপূজার (Basanti Durga Puja) দিন পশ্চিমবাংলার (West Bengal) রীতি অশোক ষষ্ঠী পালনের। কি এবং কেন এই অশোক ষষ্ঠী?
একটি পৌরাণিক কথা শোনায়ায় যে বহুযুগ আগে অশোকবনের (Ashok Shasthi) মধ্যে এক ঋষির পর্ণকুটীর ছিল।
একদিন সেই ঋষি স্নান সেরে ফেরার পথে অশোকগাছের নীচে এক সদ্য প্রসূতা কন্যাকে কাঁদতে দেখলেন। দৈবযোগে ধ্যানের মাধ্যমে ঋষি জানতে পারলেন কন্যাটি এক শাপভ্রষ্টা হরিণী মায়ের। ঋষি মেয়েটিকে আশ্রমে এনে লালন করতে লাগলেন। তার নাম দিলেন অশোকা। ঋষিকন্যা বড় হতে লাগল। যৌবনে উত্তীর্ণ হল।
এক রাজপুত্র মৃগয়ায় বেরিয়ে ঐ পরমাসুন্দরী অশোকাকে একদিন দেখতে পেয়ে তার পরিচয় জানতে পারলেন। ঋষিকন্যার সঙ্গে রাজপুত্রের কথোপকথনের মধ্যেই ঋষির আগমন হল সেই স্থানে । রাজপুত্র অশোকার পাণিপ্রার্থী হয়ে ঋষিকে অনুরোধ জানালে ঋষি যারপরনাই আনন্দিত হয়ে তাতে সম্মতি দিলেন।
অশোকাকে রাজপুত্রের হাতে সঁপে দিয়ে ঋষি বললেন :(Spiritual)
” আজ থেকে তুমি রাজার ঘরণী হ’লে কন্যা। যদি কখনো বিপদে পড় আশ্রমে চলে এস। আর রাজপুরী থেকে চিনে একাএকা এই আশ্রমে যাতে আসতে পারো তাই এই অশোকফুলের বীজ তোমাকে দিলাম। এখন যাবার সময় এই বীজ ছড়াতে ছড়াতে যেও। পরে কখনো প্রয়োজন হলে এই বীজ থেকে উত্পন্ন অশোকগাছ বরাবর চিনে পায়েহেঁটে তুমি চলে আসতে পারবে” (Spirituality)
অশোকফুলের বীজ সযত্নে আঁচলে বেঁধে নিয়ে অশোকা রাজপুত্রের সাথে পতিগৃহে যাত্রা করল। যাত্রাপথে বীজ ছড়াতে ছড়াতে চলল অশোকা। রাজপুরীতে পৌঁছালে রাজা-রাণী সস্নেহে তাদের বরণ করে ঘরে তুললেন। অশোকা আর রাজপুত্রের বাড়বাড়ন্ত সংসারে সুখের বন্যা। অশোকা ক্রমে সাত ছেলে ও এক মেয়ের মা হল। অশোকার শ্বশুর রাজামশাই মারা গেলেন শ্রাদ্ধের দিন অশোকষষ্ঠীর কথা বিস্মৃত হল অশোকা। ভাত মুখে দিয়েই মনে পড়ল ষষ্ঠীর কথা। রাতে শুয়ে পড়ল মনখারাপ নিয়ে। পরদিন ভোরে উঠে দেখল সাতছেলে-বৌ যার যার ঘরে মরে পড়ে আছে আশোকা তা দেখে ঋষির কথা ভাবলে। রাজবাড়ি থেকে বেরিয়ে আশ্রম বরাবর চলতে লাগল।
ততদিনে বীজ থেকে অশোকগাছ মহীরুহের আকার ধারণ করেছে। চৈত্রমাসে ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে তার শাখাপ্রশাখা। ঋষির আশ্রমের কাছে এসেই অশোকা ঋষিকে দেখে কেঁদে উঠলো। ঋষি ধ্যানের বলে সব অবগত ছিলেন। কন্যাকে সাথে করে রাজবাড়ী ফিরে গেলেন। কমন্ডুলু থেকে জল ছিটিয়ে দিলেন অশোকার মৃত ছেলে বৌ নাতিপুতির গায়ে । দৈবগুণে সকলে চোখ মেলে চাইল।
ঋষি বললেন অশোকষষ্টীর ব্রত পালন করলে কখনো শোক প্রবেশ করবে না সংসারে।
অশোক বৃক্ষে দেবী মহামায়া “শোকরহিতা” দেবী নামে বিরাজ করেন। যিঁনি শোক রহিত অথবা যার আরাধনা করলে শোক থাকে না – তিঁনিই দেবী শোকরহিতা দুর্গা দেবী। নবপত্রিকায় অশোক থাকেন- তাঁর পূজা মন্ত্রে বলা হয় –
ওঁ হরপ্রীতিকরো বৃক্ষোহশোকঃ শোকনাশনঃ ।
দুর্গাপ্রীতিকরো যস্মান্মামশোকং সদা কুরু ।।
এছাড়া অশোক গাছ আয়ুর্বেদিক ঔষধ রূপে বহু পূর্ব থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। যাহা আমাদের রোগ থেকে মুক্ত করেন তাহাকে আমরা ভগবানতুল্য জ্ঞান করি। সেই জন্যই হয়তো শাস্ত্রকারেরা ঔষধি বৃক্ষ গুলিকে প্রানদায়িনী ঈশ্বরের স্বরূপ বলে শাস্ত্রে স্থান দিয়েছেন। যেমন তুলসী, বেল, আমলকী, হরিতকী, নিম, ডালিম ইত্যাদি বৃক্ষে ঈশ্বরের অবস্থিত বলে ধরে নেওয়া হয়। তাই অশোক ষষ্ঠীর দিন ব্রতিনী দের অশোক ফুল দৈ সহ খাবার বিধান । স্বামী বেদানন্দ মহারাজ রচিত “দুর্গা দুর্গতিনাশিনী” পুস্তকে লিখেছেন – “অশোক গাছের ফুল স্ত্রী রোগের বড় ওষুধ। বাসন্তী ষষ্ঠী তিথিতে এদেশে অনেক সন্তানবতী নারী অশোকের ৬টি ফুলের কুঁড়ি খান। একে অশোক- ষষ্ঠীও বলা হয়ে থাকে। স্নায়ুগত বাতে, রক্তার্শে , রক্তবন্ধে, হৃদদৌর্বল্যে অশোক গাছের ব্যবহার হয়।”
অশোক ষষ্ঠীর রীতি কেন জানেন
বাসন্তী পুজোর শুক্লাপক্ষের ষষ্ঠী পশ্চিমবাংলার ঘরে ঘরে মহিলারা অশোক ষষ্ঠী পালন করেন। তিথি অনুসারে এই ব্রত চৈত্র বা বৈশাখ মাসেও হতে পারে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী অশোক ষষ্ঠী পালন করলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ হয় না এবং সন্তান সুখে থাকে। যে কোনও ষষ্ঠীর মতোই অশোক ষষ্ঠীও সন্তানের মঙ্গলকামনায় করা হয়ে থাকে।
অশোক ষষ্ঠী প্রবর্তনের উত্স্য হিসেবে প্রচলিত লোককথাটা বেশ আকর্ষণীয়। কথিত আছে, এক ঋষির আশ্রমে প্রচুর অশাোক গাছ ছিল। একদিন তিনি একটি অশোক গাছের তলায় একটি সুন্দরী মেয়েকে ক্রন্দনরত অবস্থায় দেখতে পেলেন। তিনি দয়াপরবশ হয়ে মেয়েটিকে আশ্রমে স্থান দিলেন। অশোকতলায় পেয়েছিলেন বলে তিনি মেয়েটির নাম রাখলেন অশোকা। ক্রমে মেয়েটি অপরূপ রূপবতী হয়ে যৌবনে উপনীত হল। মেয়েটিকে একা আশ্রমে রেখে যাওয়া নিরাপদ নয় ভেবে তিনি পাত্রের সন্ধান করতে লাগলেন। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজি করেও উপযুক্ত পাত্রের সন্ধান পেলেন না।
সেই সময় এক রাজা মৃগয়া করতে অশোকবনে উপস্থিত হলেন। তৃষ্ণার্ত হয়ে রাজা জলের খোঁজে ওই আশ্রমে এসে মেয়েটিকে দেখতে পান। অশোকাকে দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে যান। অশোকা তাঁকে জানান যে ঋষি ধ্যান করতে গিয়েছেন, সন্ধ্যার পর ফিরে আসবেন। তখন রাজা একটি অশোকগাছের তলায় বিশ্রাম নিতে লাগলেন। সন্ধ্যার পর বেদপাঠ করতে করতে ঋষি যখন আশ্রমে ফিরছিলেন। তখন রাজা ঋষিকে প্রণাম করে হাত জোড় করে বললেন, ‘আপনি দয়া করে আপনার কন্যাটিকে দান করলে আমি তাকে বিয়ে করে রানির মর্যাদা দিয়ে নিয়ে যেতে পারি। ঋষি মনে মনে খুব খুশি হয়ে অশোকাকে রাজার হাতে সমর্পণ করলেন।
যাবার সময় মুনি অশোকার হাত ধরে তার আঁচোলে কতকগুলো অশোফুল ও বিজ দিয়ে বললেন, ‘মা, তুমি এই ফুলগুলো শুকিয়ে রেখো আর এই বিজগুলো রাস্তার দু-ধারে ছড়াতে ছড়াতে রাজধানী পর্যন্ত যাবে। রাজার বাড়ি পর্যন্ত এই বীজগুলো থেকে অশোক গাছ জন্মাবে। যদি কোনও দিন তুমি কোনও বিপদে পড় তাহলে ওই গাছের সারি দেখে আশ্রমে আসবে। আর অশোক ষষ্ঠীর দিনে কখনও অন্ন গ্রহণ করবে না। তুমি ষষ্ঠীকে পূজা দিয়ে ৬টা অশোক কুঁড়ি, ছটা মুগকলাই, দই একসঙ্গে মুখে দিয়ে জল খাবে। গিলে খাবে, দাঁতে যেন না লাগে।’
অশোকা মুনির কথামতো বিজ ছড়াতে ছড়াতে রাজবাড়ি গেল। এরপর বহু বছর তিনি রাজবাড়িতে সুখে কাটাতে লাগলেন। কালক্রমে আশোকার ৬ ছেলে ও এক মেয়ে হল। আরও কিছুকাল পরে চৈত্রমাসে অশোক ষষ্ঠীর দিন অশোকা বৌমাদের বললেন, ‘আজ অশোকষ্ঠী, আমি আজ অন্ন গ্রহণ করব না।’ এই কথা শুনে বৌমারা মুগকড়াই সেদ্ধ করে অশোকাকে খেতে দিলেন। নিয়ম মেনে যষ্ঠীপূজা করে খেয়ে অশোকা শুয়ে পড়লেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখেন যে সবাই মরে পড়ে আছে। কিছু বুঝতে না পেরে তিনি কাঁদতে কাঁদতে অশোক গাছ বরাবর রাস্তা চিনে আশ্রমে এসে মুনিকে সব কথা খুলে বললেন।
মুনি সমস্ত বিষয়টা বুঝতে পেরে অশোকাকে বলেন, ‘মা, তুমি যে মুগকলাই সেদ্ধ খেয়েছ, তার মধ্যে একটা ধান ছিল, সেই ধান সেদ্ধ হয়ে ভাত হয়েছে। তা খেয়েই এই বিপত্তি। ঠিক আছে আমি তোমাকে মন্ত্রপূত জল দিচ্ছি, তুমি বাড়ি গিয়ে এই জল ছিটিয়ে দিলে সবাই আবার বেঁচে উঠবে। অশোকা বাড়ি ফিরে এসে জল ছিটিয়ে দিতে সবাই উঠে বসে সমস্ত বৃত্তান্ত শুনে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। ধীরে ধীরে সমস্ত রাজ্যে এই কাহিনি ছড়িয়ে পড়ল। ষষ্ঠীর মহিমা শুনে সবাই অশোক ষষ্ঠী পালন করতে শুরু করল। রাজাও সমস্ত রাজ্যে এই ব্রত পালন করতে আদেশ দিলেন। রাজ্য জুড়ে ‘অশোক ষষ্ঠী পুজোর প্রচার হল।
অশোক ষষ্ঠীর ব্রতকথা— সে যুগে তপোবনে এক মুনি থাকতেন। বনটির চারিদিকে অনেক অশোক গাছ জন্মেছিল। মুনি একদিন সকালে পুজোর ফুল তুলতে তুলতে দেখলেন, একটা অশোক গাছের গোড়ায় খুব সুন্দর একটি সদ্যোজাত মেয়ে কাঁদছে।
মুনি তখনই মেয়েটিকে তুলে নিয়ে তাঁর আশ্রমে ফিরে গেলেন। পরে ধ্যান করে তিনি জানতে পারলেন যে, শাপের ফলে হরিণরূপিণী এক স্ত্রীলোক এই মেয়েটিকে প্রসব করেছে।
মুনি মেয়েটিকে খুব যত্নে লালন-পালন করতে লাগলেন। হরিণীও রোজ একবার করে এসে মেয়েটিকে দুধ খাইয়ে যেতে লাগল। অশোক গাছের গোড়ায় তাকে পাওয়া গিয়েছিলো বলে মুনি মেয়েটির নাম রাখলেন অশোকা।
এই ভাবে মেয়েটি ক্রমে বেশ বড় হয়ে উঠল। এখন তার বিয়ে দেওয়া দরকার। মুনি তখন মনে মনে স্থির করলেন যে, পরের দিন সকালে প্রথমে তিনি যার মুখ দেখবেন, তারই সঙ্গে অশোকার বিয়ে দেবেন।
দৈবের লীলা কে বুঝবে? পরের দিন সকালে উঠে মুনি দেখতে পেলেন যে, এক রাজপুত্র তার অনেক লোকজন নিয়ে আশ্রমের দরজায় অপেক্ষা করছে।
মুনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি এখানে এসেছো কেন?” রাজপুত্র বলল, “আমি মৃগয়া করতে বেরিয়েছিলাম কাল রাত্তিরে খুব ঝড় জল হওয়ায় আর ফিরতে পারিনি, আপনার কুটীরে আশ্রয় নিয়েছিলাম।”
মুনি দেখলেন ভাল সুযোগ, তখন তিনি রাজপুত্রকে নিজের ইচ্ছার কথা জানালেন। মুনির কথা শুনে রাজপুত্র মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজী হল আর মুনি রাজপুত্রের হাত ধরে অশোকাকে তার হাতে সঁপে দিলেন।
মুনি পরে বললেন, “কুমার! আমি তোমার পরিচয় জানি না আর তুমিও এর পরিচয় জানো না, তবুও আমার কথায় তুমি একে বিয়ে করলে—তুমি আর তোমার বাবা, এ বিয়েতে খুশীই হবেন। অশোকা খুবই গুণের মেয়ে।”
তারপর মুনি আবার অশোকাকে বললেন, “মা অশোকা, এই অশোক ফুলের বীচিগুলো দিচ্ছি নিয়ে যা আর এখান থেকে যাবার পথে বীচিগুলো রাস্তায় ছড়িয়ে দিস, তাহলে রাজবাড়ি পর্যন্ত অশোকগাছের সারি হয়ে যাবে আর দরকার হলে তুই একলাই এই অশোকগাছের সারি ধরে আমার কাছে পথ চিনে আসতে পারবি।
আর অশোক ফুলগুলো শুকিয়ে রেখে দিস, চৈত্র মাসে অশোক ষষ্ঠীর দিনে ওগুলো খাস, তাহলে জীবনে কখনো শোক তাপ পাবি না।”
মুনিকে প্রণাম করে রাজপুত্র অশোকাকে সঙ্গে নিয়ে রাজবাড়িতে ফিরে গেল। রাজা-রাণী সব শুনে খুশী মনেই ছেলে-বৌকে বরণ করে ঘরে তুললেন। এরপর বেশ কিছুদিন কেটে গেল।
অশোকার সাত ছেলে ও এক মেয়ে হয়েছে, রাজা-রাণী সময়মতো সকলেরই বিয়ে দিয়ে স্বর্গে গেছেন। একবার চৈত্র মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে রাজার বাৎসরিক শ্রাদ্ধের তিথি পড়ল।
অশোকা বৌয়েদের ডেকে বলল, “আজ অশোক ষষ্ঠী, আমি আজ ভাত খাবো না।” বৌয়েরা তখন মুগকড়াই সেদ্ধ করে দিল। সারা দিন কাজকর্ম করার পর ক্লান্ত হয়ে রাত্তিরে সকলেই ঘুমিয়ে পড়ল।
পরের দিন অশোকা দেখল যে, ছেলের বৌয়েরা কেউ ঘুম থেকে ওঠেনি। শেষে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ফেলে অশোকা দেখলে যে, সকলেই বিছানায় মরে পড়ে আছে। এই অবস্থায় পড়ে অশোকার হঠাৎ মুনির কথা মনে পড়ে গেল।
অমনি সে অশোক গাছের সারি ধরে মুনির কাছে গিয়ে হাজির হল। মুনি অশোকার সব কথা শুনে ধ্যান করে সব কথা জানতে পারলেন আর অশোকাকে বললেন যখন সেদ্ধ করছিল তখব অসাবধানে একটা ধান তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল,
আর তাই খাওয়ার জন্যে সেই পাপে ওই দুর্দশা হয়েছে তাদের। যাক তুই এই কমণ্ডলুর জল নিয়ে গিয়ে তাদের গায়ে ছিটিয়ে দে, তাহলেই সকলে বেঁচে উঠবে। অশোক ষষ্ঠীর দিন খুব সাবধানে ছ’টি অশোক কুঁড়ি, ছ’টি মুগ কড়াই, দই দিয়ে খেয়ে তবে অন্য জিনিস খাস্।”
মুনির কাছ থেকে কমণ্ডলুর জল নিয়ে এসে, অশোকা সবার গায়ে ছিটিয়ে দিতে তারা সকলেই বেঁচে উঠলো। তার পর মায়ের মাহাত্ম্য ক্রমে ক্রমে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল।
অশোক ষষ্ঠীর ব্রতের ফল— অশোকষষ্ঠী ব্রত পালন করলে নিজের ছেলে-মেয়েরা দীর্ঘজীবী হয়ে থাকে।
(সংগৃহীত)