সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য সম্পর্কে শালীনতা হানির অভিযোগ এনেছেন এক মহিলা সাংবাদিক। কালবিলম্ব না করে তন্ময়ের দল তাকে দল থেকে বহিস্কার করেছে। একটা কথা ঠিক যে, কোনো মহিলা সাধারণভাবে নিজের সম্ভ্রম নিয়ে মিথ্যা বলতে পারে না।
এবার একটা প্রচলিত প্রবাদ স্মরণ করছি -‘ প্রেম, যুদ্ধ আর রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছু হয় না।’ তার মানে এটা মোটেই নয় যে মহিলা সাংবাদিক অসত্য বলছেন। তবে এই বিষয়ে অভিযুক্ত তন্ময় ভট্টাচার্যের প্রশ্নগুলো গুরুত্ব দিয়ে শুনতে হবে। তারপরে নাগরিক মহল সিদ্ধান্ত নেবেন নিজেদের মেধা, বুদ্ধি ও বিবেক দিয়ে।
তন্ময় ভট্টাচার্যের প্রশ্নগুলো কিন্তু মানুষকে ভাবতে হবে ।
১) মহিলা সাংবাদিকের অভিযোগ, আগেও বার বার এমন কান্ড করেছেন তন্ময়। তাহলে কেন আগে তিনি অভিযোগ করেন নি? তার পরেও কেন তিনি বার বার তন্ময়ের কাছে গেছেন ইন্টারভিউ নিতে ? কেন নিজের অফিসকে জানান নি? কেন থানায় অভিযোগ করেন নি?
২) আরো প্রশ্ন, অমন খারাপ ঘটনার পরে কেন তিনি ইন্টারভিউ কমপ্লিট করলেন ?
৩) কেন ক্যামেরাম্যান নীরব থাকলেন?
৪) কেন তখনই বরানগর থানায় অভিযোগ জানালেন না?
৫) কার পরামর্শে কেনই বা বেশ কয়েক ঘন্টা পরে থানায় অভিযোগ জানালেন?
এই সমস্ত প্রশ্নগুলো কিন্তু সামনে চলে এসেছে।
এবার একটু ফিরে যাই ১৯৯৮ সালে। সকলের মনে আছে বাংলা কাঁপানো সেই ঘটনা।
১৯৯৮। ভাঙড়ের অশ্বত্থবেড়িয়া গ্রাম। চম্পলা সর্দার। পশ্চিমবঙ্গ তোলপাড় করেছিলেন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, তৃণমূল কর্মী চম্পলা সর্দার ধর্ষিতা। নারীর নিরাপত্তা নেই। আইনশৃঙ্খলা নেই। এই আওয়াজ তুলে রাজ্য জুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছিলেন মমতা। পাঁচ জন সিপিএম সমর্থককে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। ২০০১ সালের নির্বাচনেও ‘ধর্ষিতা চম্পলা’ ছিল জোরালো ইস্যু। ২০০৩-এ প্রমাণ হয়েছিল, চম্পলা ধর্ষিতা হননি। আলিপুর আদালত ধর্ষণে অভিযুক্ত পাঁচ জনকেই মুক্তির আদেশ দেয়।(সূত্র আনন্দবাজার -১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬)
আমরা শুধুই এইটুকু বলতে চাইছি – রাজনীতি হলো সমস্ত সম্ভাব্যতার খেলা।
তন্ময় ভট্টাচার্য অপরাধ করলে তার চূড়ান্ত শাস্তি হোক। আর তা না হলে অভিযোগকারিনীকেও দেওয়া হোক শাস্তি।