ভারতের তন্ত্র সাধনা একটি প্রাচীন ও রহস্যময় প্রথা, যা মূলত শাক্ত, শৈব এবং কিছু ক্ষেত্রে বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত। এটি কেবল ধর্মীয় আচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ পদ্ধতি, যা গুপ্তযুগের শেষভাগে পূর্ণ বিকাশ লাভ করে এবং বিভিন্ন সম্প্রদায় ও দেবদেবীর আরাধনার সাথে যুক্ত হয়েছে, যেমন কালভৈরব, কালী, তারা ইত্যাদি। তন্ত্র সাধনা বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে, যেমন দিব্যচক্র বা তত্ত্বচক্র এবং ভৈরবীচক্র বা স্ত্রী-চক্র।
তন্ত্র সাধনার মূল বিষয়
- ঐতিহ্য: এটি একটি পরম্পরাগত আগমশাস্ত্র বা পদ্ধতি, যেখানে নির্দিষ্ট বিধি, কলাকৌশল এবং কার্যপ্রণালী অনুসরণ করা হয়।
- আচার: এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আচার অন্তর্ভুক্ত, যেমন ‘শব সাধনা’ যা একটি অত্যন্ত গোপন ও কঠিন প্রক্রিয়া।
- বিভিন্ন রূপ: তন্ত্র সাধনার অসংখ্য শাখা-প্রশাখা রয়েছে, যেমন কালভৈরব, বিশুদ্ধি, কুমারী, শৈব, শাক্ত, নির্বাণ, অভয়, যোগিনী, কামধেনু এবং সূর্য তন্ত্র।
- মহাবিদ্যা: এটি দশটি হিন্দু তান্ত্রিক দেবীর একটি দল, যার মধ্যে রয়েছেন কালী, তারা, ত্রিপুরা সুন্দরী, ভুবনেশ্বরী, ভৈরবী, ছিন্নমস্তা, ধূমাবতী, বগালামুখী, মাতঙ্গী এবং কমলাত্মিকা।
- চক্রানুষ্ঠান: কিছু তন্ত্র সাধনায় চক্র বা গোষ্ঠীর মধ্যে দেব-দেবীর আরাধনা করা হয়, যেমন তত্ত্বচক্র বা দিব্যচক্র এবং ভৈরবীচক্র বা স্ত্রী-চক্র।
- প্রভাব: তন্ত্র সাধনা ভারতের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষত দক্ষিণ ভারতে, মন্দিরের আচারেও প্রভাব ফেলেছে এবং এটি বিভিন্ন সাহিত্যেও উল্লেখিত হয়েছে।
