বাংলার পূজা সংস্কৃতির বৈচিত্র অসাধারণ। এক এক কোনায় প্রচলিত আছে এক এক রকম ধৰ্মীয় সংস্কৃতি। আজ কালীপুজো। তেমনই এক সুন্দর ধৰ্মীয় সংস্কৃতি দেখা গেলো দক্ষিণ দিনাজপুরে। কালীপুজোর সময় হচ্ছে লক্ষ্মী পুজো। তাও আবার সীতাকেই লক্ষ্মী হিসাবে পুজো করছেন গ্রামের বাসিন্দারা। বসেছে বিশাল মেলা। চলবে টানা পাঁচদিব। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের বোল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের শরণ গ্রামে কালীপুজোর মধ্যেই এভাবে লক্ষ্মী পুজো হয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে। এবার ৯১ বছরে পড়ল এই পুজো। শনিবার মধ্যরাতে হয়ে গিয়েছে পুজোর সূচনা। খুশির হাওয়া গোটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন ব্রিটিশ আমলে এক সময় গ্রামে দারিদ্রতার ছাপ ছিল স্পষ্ট। সেই সময়ই কালীপুজোর এই সময়কালে ধনলক্ষ্মী পুজোর সূচনা করেন গ্রামের মহিলারা। সেই সময় থেকেই দুর্গাপুজোর মতো ৫ দিন ধরে লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে।
গ্রামের কয়েকশো এই পুজোতে অংশ নেয়। পুরো গ্রাম মেতে ওঠে উৎসবে। ১০০টি মঙ্গল ঘটে করে পুকুর থেকে জল এনে পুজোর সূচনা করেন মহিলারা। তাও হয় রাতের বেলা। শুধু এই গ্রাম নয়, অদ্ভুত রীতির এই পুজো দেখতে দূর-দূরান্ত থেকেও প্রচুর মানুষ ভিড় করেন এই গ্রামে। পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর। সঙ্গে হয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান, হয় যাত্রাপালাও। সীতাকেই এখানে লক্ষ্মী হিসাবে পুজো করা হলেও সীতার পাশাপাশি লব, কুশ ও হনুমানেরও পুজো হয় এখানে। গ্রামবাসীরা বলছেন, আর্থিক অনটন দূর করতেই পুজোর শুরু হয়েছিল। তাঁদের অবস্থার কথা বুঝেছেন দেবী। পুজোর শুরুর পর থেকে ধীরে ধীরে ফিরেছে গ্রামের হাল। আগের থেকে গোটা এলাকার আর্থিক অবস্থা অনেকটাই ভাল। ফলে ধনলক্ষ্মী পুজোর উপর মানুষের আস্থা যেন দিনে দিনে আরও বেড়েছে। বেড়েছে বিশ্বাস। সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে পুজোর জাঁকজমক।