নবান্ন উৎসব হলো নতুন আমন ধান কাটার পর নতুন চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত একটি ঐতিহ্যবাহী বাঙালি ফসল উৎসব। সাধারণত বাংলা অগ্রহায়ণ মাসে এই উৎসব পালিত হয়, তবে কিছু অঞ্চলে পৌষ বা মাঘ মাসেও এর প্রচলন দেখা যায়। এটি কেবল নতুন ফসল ঘরে তোলার আনন্দই নয়, বরং উর্বরতা, বৃষ্টি ও শস্যের দেবী লক্ষ্মীর পূজা এবং বিভিন্ন লোকনৃত্য, গান ও পিঠাপুলির আয়োজনও এর অবিচ্ছেদ্য অংশ।
উৎসবের তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য
নতুন অন্ন গ্রহণ:
‘নবান্ন’ শব্দের অর্থই হলো ‘নতুন অন্ন’। নতুন ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্নাকে কেন্দ্র করে এই উৎসব হয়, যা কৃষিজীবী মানুষের জন্য আনন্দ ও সমৃদ্ধির প্রতীক
কৃষিভিত্তিক আনন্দ:
প্রধান শস্য সংগ্রহকে কেন্দ্র করে এই উৎসব পালিত হয়, যা গ্রামবাংলার কৃষিজীবী সমাজকে আনন্দ ও স্বস্তি এনে দেয়।
ঐশ্বরিক আশীর্বাদ প্রার্থনা:
এই উৎসবে দেবীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয় এবং উর্বরতা, সমৃদ্ধি ও ভালো বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উৎসবের সময়কাল ও স্থান
সময়:
সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়, তবে কিছু অঞ্চলে মাঘ মাসেও এটি পালিত হতে পারে।
স্থান:
বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকা এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু অঞ্চলে এই উৎসব প্রচলিত আছে।
উদযাপনের বৈশিষ্ট্য –
খাবার:
নতুন চালের ভাত এবং নানা ধরনের পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়।
পূজা:
হিন্দু রীতি অনুসারে শস্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মীর পূজা করা হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান:
নাচ, গান, আবৃত্তি এবং অন্যান্য লোকনৃত্যের মাধ্যমে এই উৎসব উদযাপন করা হয়।
সামাজিক মিলন:
পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে নতুন অন্ন পরিবেশন ও ভাগ করে নেওয়া হয়।