প্রায় বছর ষাটেক আগের কথা। বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের ভুঁড়ি গ্রামে ধুমাধাম করে কালীপুজোর প্রচলন করেছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু ফি বছর বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে গ্রামবাসীরা একে একে চলে যান পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামে। কার্যত জনমানবহীন শ্মশানভূমিতে পরিণত হয় গ্রামটি। কালীপুজো উপলক্ষে প্রতি বার গ্রামে ফেরেন পুরোনো বাসিন্দারা। কচিকাঁচাদের কলকাকলি, বড়দের হাঁক-ডাকে এক দিনের জন্য প্রাণ ফিরে পায় পরিত্যক্ত গ্রামটি। স্থানীয় সূত্রের খবর, ময়ূরাক্ষী নদীর তীরবর্তী কেশববাটি মৌজায় অবস্থিত ভুঁড়ি গ্রাম। এক সময়ে প্রায় ৫০টি পরিবারের বাস ছিল এখানে। অধিকাংশই কৃষিজীবী। প্রায় প্রতি বছর বন্যায় ভেসে যেত তাঁদের ঘরবাড়ি, মাঠের ফসল। নদীর ভাঙনে তলিয়ে যেত কৃষি জমিও। তাই বন্যার হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য গ্রামবাসীরা কালীপুজোর প্রচলন করলেন। তাতেও বন্যা রোধ করা সম্ভব হয়নি। বাঁচার তাগিদে বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা একে একে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে পড়েন। পুরোপুরি জনশূন্য হয়ে পড়ে গ্রামটি।
তবে কালীপুজোর প্রচলন এখনও আছে। কালীপুজোর দিনটিতে বদলে যায় গ্রামের চাকচিক্য। যে যেখানেই থাকুক না কেন, কালী মায়ের আরাধনা করতে গ্রামে হাজির হন সকলে। কয়েক দিন আগে থেকেই শুরু হয় পুজোর তোড়জোড়। প্রতিমা নির্মাণ, মণ্ডপসজ্জা থেকে শুরু করে আলোর ব্যবস্থা—সামিল হতে দেখা যায় আট থেকে আশিকে। এ বারও যার অন্যথা হয়নি। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, পুজোর জন্য বরাদ্দ রয়েছে বিঘে তিনেক জমি। সেই জমির আয়-সহ নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে পুজোর আয়োজন করা হয়।