মাঝে আর মাত্র ২ দিন। টার পরেই বাংলার অন্যতম পুজো কালীপুজোতে মেতে উঠবে সাধারণ বাঙালি। আজ আমাদের আলোচনা কলকাতার কালীপুজো নিয়ে। কলকাতার কালীপুজো মানেই একদিকে যেমন প্রাচীন মন্দিরের চিরন্তন ভক্তি, তেমনই অন্যদিকে বারোয়ারি পুজোর থিমের চমক এবং বিশালতা। শহরের সেরা ৫টি কালীপুজো এই দুই ধারার এক দারুণ মিশ্রণ।
১. কালীঘাট কালী মন্দির: এই স্থানটি ৫১ শক্তিপীঠের অন্যতম। কালীপুজোর দিন কালীঘাটের কালী মন্দিরের জৌলুস ও ভক্ত সমাগম দেখার মতো। দেবী এখানে ‘কালিকা’ রূপে পূজিত হন। হাজার হাজার ভক্ত এই দিনে দেবীর কাছে মনস্কামনা জানাতে ভিড় করেন। মন্দিরের বাইরে ও ভিতরে এক পবিত্র ও প্রাচীন আবহাওয়া বিরাজ করে, যা কলকাতার কালীপুজোর মূল ঐতিহ্যকে বহন করে।
২. দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির: রাণী রাসমণি প্রতিষ্ঠিত এই মন্দির হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত। দেবী ভবতারিণী রূপে এখানে পূজিত হন। কালীপুজোর রাতে মন্দির চত্বর লক্ষ লক্ষ প্রদীপের আলোয় ঝলমল করে। শুধুমাত্র কলকাতা নয়, সারা ভারত থেকে ভক্তরা এখানে আসেন মায়ের দর্শন ও আশীর্বাদ নিতে। বিশেষত রাতে আরতি ও আলোকসজ্জা এক স্বর্গীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে।
৩. *ঠনঠনিয়া কালী বাড়ি:* উত্তর কলকাতার বিধান সরণীর গভীরে অবস্থিত এই মন্দির কলকাতার অন্যতম জাগ্রত ও প্রাচীন কালী মন্দির। জনশ্রুতি আছে, এই মন্দির কলকাতার জন্মলগ্ন থেকেই বিদ্যমান। কালীপুজোর রাতে এখানে প্রাচীন প্রথা মেনে দেবীর পূজা করা হয়। মন্দিরের শান্ত ও ভক্তিপূর্ণ পরিবেশ লক্ষ লক্ষ মানুষকে আকর্ষণ করে।
৪. ফাটাকেষ্টর কালীপুজো (কলেজ স্ট্রিট) : উত্তর কলকাতার এই বারোয়ারি পুজোটি তার ঐতিহ্য ও বিশালতার জন্য বিখ্যাত। ১৯৫৭ সাল থেকে কৃষ্ণ চন্দ্র দত্ত বা ‘ফাটা কেষ্ট’ এই পুজোর সূচনা করেন। এটি কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় বিগ বাজেটের পুজো, যেখানে থিমের জাঁকজমকের সঙ্গে দেবীর প্রতি ভক্তদের আন্তরিকতাও সমানভাবে দেখা যায়।
৫. চেতলা ডাকাত কালীপুজো: প্রায় ৫৫০ বছরেরও বেশি প্রাচীন এই পুজো লোকমুখে ‘ডাকাত কালী’ নামে পরিচিত। কথিত আছে, আগে এই কালী ডাকাতদের দ্বারা পূজিত হতেন। বর্তমানে এই পুজো চেতলার ঐতিহ্য ও লোকবিশ্বাসের প্রতীক। দেবীর উগ্র ও অলংকারসজ্জিত রূপ দেখতে কালীপূজার রাতে
ভক্তরা এখানে ভিড় করেন। এটি কলকাতার প্রাচীন বারোয়ারি এবং ঐতিহ্যবাহী পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম।