৫১ সতী পীঠের অন্যতম একটি সতীপীঠ হিংলাজে অবস্থিত। ভারত ছাড়াও পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপালে রয়েছে কয়েকটি সতীপীঠ। কালীপুজোর দিন মহা ধুমধাম সর্বত্র কালী মায়ের পুজো হবে। হিংলাজ সম্পর্কে একটি প্রচলিত কাহিনী আজ আপনাদের শোনাবো। কৃষ্ণের সুদর্শন চক্রের দ্বারা দেবীর দেহ ৫১ খণ্ডে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এইসব জায়গাকেই সতীপীঠ বলা হয়। সতীর ৫১ পীঠ হিন্দু ধর্মে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও পরম পবিত্র জায়গা বলে বিবেচিত হয়। হিন্দুদের এই পবিত্র ৫১ পীঠের একটি কিন্তু অধুনা পাকিস্তানে। পাকিস্তানেই আছে মরুতীর্থ হিংলাজ শক্তিপীঠ।
পুরাণ অনুযায়ী এখানে সতীর মন বা মস্তিষ্ক পড়েছিল। পাকিস্তানের করাচি থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে এখানে দেবী দুর্গার নাম কোটারি। ভয়ঙ্কর তৃতীয় নয়নের জন্য শিব এখানে ভীমলোচন। ১৯৬০-এর আগে পর্যন্ত হিংলাজ তীর্থ অনেক বাঙালির কাছেই ছিল অচেনা। ১৯৫৯-এ বেশিরভাগ বাঙালি হিংলাজ তীর্থ সম্পর্কে জানল উত্তমকুমার-বিকাশ রায়ের “মরুতীর্থ হিংলাজ” ছবির হাত ধরে। বালুচিস্তানের রুক্ষ মরুপ্রান্তরে নিঃসঙ্গ এক হিন্দু তীর্থ, হিংলাজ। বহু প্রাচীনকাল থেকেই দেবী এখানে কোট্টরী ও ভৈরব ভীমলোচন রূপে পূজিত হন। স্থানীয়রা বলেন হিংলাজ দেবী। এই মন্দিরের নামেই গোটা গ্রামের নাম হিংলাজ। মূল সংস্কৃত শব্দটি হল “হিঙ্গুলা”৷ পুরাণ মতে, এই বালুচিস্তানের হিংলাজেই পড়েছিল সতীর ব্রহ্মরন্ধ্র। মন্দিরের কাছে আছে একটি কুণ্ড, কুণ্ডের মধ্যে অবিরাম ফুটতে থাকে কাদা মাটি। সেই ফুটন্ত কুণ্ডের কাছে এসে অন্তর থেকে নিজের পাপের কথা বললে নাকি ঘটে পাপমুক্তি। কথিত আছে, রাবণ যেহেতু ব্রাহ্মণ ছিলেন, তাই রাবণ বধের পর এই হিংলাজে এসেই দীর্ঘদিন ধরে তপস্যা করে পাপস্খালন করেছিলেন স্বয়ং রামচন্দ্র।