বিশ্বের অন্যতম ও প্রাচীনতম রথযাত্রা হয় পুরীতে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে এখানে। আজকেও কয়েক লক্ষ মানুষ উপস্থিত হয়েছে রথের রশি ধরার জন্য। পুরীর রথযাত্রা, যা ‘গুন্ডিচা যাত্রা’ নামেও পরিচিত, ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার প্রতি উৎসর্গীকৃত একটি বিখ্যাত হিন্দু উৎসব। এটি ওড়িশার পুরীতে প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে, তিনটি বিশাল রথে করে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি মন্দির থেকে গুন্ডিচা মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সাত দিন পর আবার জগন্নাথ মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হয়। পুরীর রথযাত্রার ইতিহাস প্রাচীন এবং কিংবদন্তি দ্বারা সমৃদ্ধ।
লোককথায় আছে, রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন, যিনি জগন্নাথ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তার স্ত্রী রাণী গুন্ডিচা জগন্নাথকে বছরে একবার গুন্ডিচা মন্দিরে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। সেই থেকেই এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে। রথযাত্রা উৎসবের মূল তাৎপর্য হল, এই উৎসবের মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরের মানুষ, এমনকি যারা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারে না, তারাও দেবতাদের দর্শন ও আশীর্বাদ লাভ করতে পারে। এই উৎসবটি জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের জন্য একটি মিলন ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। পুরীর রথযাত্রা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও। এই উৎসবে লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয় এবং রথের দড়ি টানতে পারা একটি পরম সৌভাগ্য হিসেবে ধরা হয়। পুরীর রথযাত্রা ভারতীয় সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য অপরিসীম।