কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ এবং মানবতাবাদী কবি। তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং মানবতার জয়গান গেয়েছেন। তাঁর লেখায় সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের বিরুদ্ধে ছিল সুস্পষ্ট প্রতিবাদ। তিনি ধর্মকে ব্যক্তিগত বিশ্বাস হিসেবে দেখতেন এবং একে কেন্দ্র করে হানাহানির ঘোর বিরোধী ছিলেন।
- নজরুলের ধর্মবোধের কয়েকটি দিক নিচে তুলে ধরা হলো:
- মানব ধর্মই প্রধান:
নজরুল সকল ধর্মের ঊর্ধ্বে মানব ধর্মকে স্থান দিয়েছেন। তার কাছে মানুষ হিসেবে সকলের অধিকার সমান ছিল। - অসাম্প্রদায়িকতা:
তিনি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি পছন্দ করতেন না এবং সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান সবার প্রতি ছিল তার সমান দৃষ্টিভঙ্গি। - সাম্য ও বিদ্রোহ:
তার লেখায় সমাজের ভেদাভেদ, শোষণ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছিল সোচ্চার প্রতিবাদ। তিনি ছিলেন সাম্যবাদের প্রতীক এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের প্রতি ছিলেন সহানুভূতিশীল। - ধর্মীয় ভণ্ডামির বিরোধিতা:
নজরুল ধর্মের নামে ভন্ডামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, ধর্মের আসল উদ্দেশ্য মানবকল্যাণ হওয়া উচিত, যা তিনি তার লেখায় ফুটিয়ে তুলেছেন। - দেশপ্রেম:
নজরুলের কাছে দেশমাতৃকার প্রতি শ্রদ্ধা ছিল সর্বোচ্চ। তিনি ধর্মকে দেশের চেয়ে বড় করে দেখেননি। - ব্যক্তিগত জীবন:
নজরুল মক্তবে শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং ইসলামের প্রাথমিক জ্ঞান লাভ করেন। তিনি একসময় মুয়াজ্জিন ও মাজারের খাদেম হিসেবেও কাজ করেছেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হন এবং সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন। মোটকথা, নজরুল ছিলেন একজন মানবতাবাদী কবি, যিনি ধর্মকে সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে রেখে মানবতার জয়গান গেয়েছেন।