আর কয়েকদিন মাত্র বাকি দুর্গাপূজার। বাংলা সহ সারা বিশ্ব জুড়ে মহা সমারোহে আয়োজন করা হবে এই পুজোর।দশভুজারূপে তিনি শুধু বঙ্গভূমিতে পা রাখেন না, তিনি আবির্ভূতা হন ইউরোপেও। ফ্রান্সও যে তাঁর কাছে মর্ত্যভূমি। দুনিয়ার যে প্রান্তেই বাঙালি আছে, সেখানেই বছরের কয়েকটি দিন শোনা যায় ‘বলো দুর্গা মাইকি’ ধ্বনি। আশ্বিনের শারদপ্রাতে যেন ‘কবিতার শহর, প্রেমের’ শহর প্যারিসের বাঙালিদের মনেও আলোকমঞ্জরী ফুটে ওঠে। প্যারিসের দুর্গাপুজোর (Durga Puja Overseas) যাত্রা শুরু ১৯৮৭ সালে। মূকাভিনয় শিল্পী পার্থপ্রতিম মজুমদারের উদ্যোগে। সম্মিলনী নামক স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে। সেসময় তাঁকে যোগ্য সহযোগিতা করেন এয়ার ইন্ডিয়া প্যারিসের তৎকালীন অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রভাস মজুমদার, চলচ্চিত্র সমালোচক ও শিক্ষাবিদ অজয় বসু, ভারতীয় শিল্প সংঘের বিশিষ্ট কর্তা প্রশান্ত লাহিড়ী, প্রখ্যাত গায়িকা কাকলি সেনগুপ্ত, শিক্ষাবিদ ড: বিকাশ সান্যাল এবং ড: নরেশ সেন। এই বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের প্রচেষ্টা ব্যতীত এই পুজো সম্ভব ছিল না। সকলে মিলে শুরু করেছিলেন প্যারিসের দুর্গাপুজো, বলা ভালো এক বিরাট মিলনমেলা।
সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত একই ঐতিহ্য বহন করে চলেছে এই বঙ্গসমিতি। পুজোর দিনগুলিতে স্থানীয় বাঙালি-অবাঙালি সকলের কাছে অবারিত দ্বার। গত ৩৯ বছর ধরে সামগ্রিকভাবে সময় ও নির্ঘণ্ট মেনে এই পূজা হয়ে চলেছে। পুজোর নিরামিষ ভোগের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হয় না কেউই। সম্মিলনীর সদস্যরা নিজেদের হাতে ভোগ প্রস্তুত করে মাকে অর্পণ করেন। প্রতিদিন আগত সকল দর্শনার্থীদের মধ্যে সেই ভোগ বিতরণের দায়িত্বও নেন তাঁরাই। যেহেতু দূরদেশে প্রতি বছর প্রতিমা নির্মাণ বা আনা খুবই কষ্টসাধ্য, তাই অত্যন্ত যত্ন নিয়ে প্রতিমা সংরক্ষণ করতে হয়। একই প্রতিমায় একাধিক বছর পুজো করা হয়। বর্তমানের প্রতিমাটি স্ফটিক নির্মিত। সাধারণত পৌরোহিত্যের দায়িত্ব যোগ্য সদস্যদের কাঁধেই বর্তায়। তবে প্রয়োজনে, স্থানীয় রামকৃষ্ণ মঠের মহারাজ বা প্রবাসী দক্ষিণী পুরোহিতদেরও সাহায্য নেওয়া হয়। উপস্থিত থাকেন ভারতের রাষ্ট্রদূতরাও।