পর পর ৬ বছর তারা অসাধারণভাবে পুজো করে আসছেন। পুজোর সমস্ত রীতি মেনেই আয়োজন করা হয় পুজোর। গত ছয় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ‘শারদ সম্প্রীতি’ নামক এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গোৎসব হিসেবে, যা আজ প্রবাসী বাঙালিদের পাশাপাশি স্থানীয় জার্মান সমাজেও একটি বহুল প্রতীক্ষিত উৎসবে পরিণত হয়েছে। সংগঠনের সদস্যেরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও ভাবে বাঙালি ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত। পুজোর প্রতিটি খুঁটিনাটি— মণ্ডপ সাজানো, ফল কাটা থেকে দেবীর ভোগ রান্না করা—সবই সদস্যদের নিজস্ব উদ্যোগে সম্পন্ন হয়। কলকাতা থেকে বিশেষ ভাবে আগত পুরোহিত মহাশয় প্রথম দিন থেকেই আচার-অনুষ্ঠান সম্পূর্ণরূপে শাস্ত্রবিধি মেনে করে আসছেন। আর, বিদেশের কোনও উইকএন্ড পুজো নয়, নির্ঘণ্ট মেনে পঞ্জিকা মতে ‘শারদ সম্প্রীতি’র পুজো হয় ষষ্ঠী থেকে দশমী।
দিনের বেলায় পুজোপাঠ আর অঞ্জলি, সন্ধ্যায় আনন্দোৎসব— এ ভাবেই জমে ওঠে উৎসবের আবহ। নাচ, গান, নাটক আর সঙ্গীতানুষ্ঠানে রঙিন হয়ে ওঠে প্রতিটি সন্ধ্যা। এর জন্য প্রবাসী শিশুরা থেকে শুরু করে বড়রা মাসের পর মাস ধরে রিহার্সাল করেন। সত্যিই, এই মঞ্চ হয়ে উঠেছে প্রতিভা প্রকাশের এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম। এ খানে ছোট ছোট বাচ্চারা, যারা সারা বছর জার্মান ভাষা ও সংস্কৃতির মধ্যে বড় হয়, এই পাঁচ দিনেই যেন বাঙালিয়ানার প্রতি টান পায়। মাতৃভাষার গান, ঢাকের আওয়াজ আর পুজোর আবহ তাদের অজান্তেই ফিরিয়ে নিয়ে যায় শিকড়ের কাছে। সম্প্রীতির দুর্গোৎসব কেবল বাঙালি প্রবাসীদের নয়, মিউনিখের স্থানীয় জার্মান সম্প্রদায়কেও যুক্ত করেছে এই মিলনমেলায়। তারা এসে ভোগ খেয়ে, আনন্দে মেতে, বাঙালিয়ানার উষ্ণতাকে কাছ থেকে অনুভব করেন।