অর্জুনের প্রতি উর্বশীর অভিশাপ
ইন্দ্র-প্রেরিত রথে চড়ে অর্জুন দেবলোকে গেলেন। সেখানে ইন্দ্রের কাছে বিভিন্ন প্রকার অস্ত্র শিক্ষা করে পাঁচ বছর অতিবাহিত করেন। অর্জুনের সেই সময়ে উর্বশী ও অন্য অপ্সরাদের নৃত্য দেখার সৌভাগ্য হয়। এই অপ্সরামণ্ডলীর মাঝে উর্বশীর দিকে অর্জুন বেশ কয়েক বার দৃষ্টিপাত করায় ইন্দ্র সে কথা গন্ধর্ব চিত্রসেনকে জানান। চিত্রসেন ছিলেন অর্জুনের নৃত্য, গীত ও বাদ্যের গুরু। তিনি উর্বশীকে জানান যে, অর্জুন তাঁর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছেন এবং তাঁর প্রতি মিলনাকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। উর্বশী চিত্রসেনকে জানালেন যে, তিনিও অর্জুনের প্রতি অনুরক্তা। তিনি অপূর্ব সাজে সজ্জিতা হয়ে অর্জুনের কাছে গেলেন এবং মিলিত হতে চাইলেন।
অর্জুন জানালেন যে, উর্বশী তাঁর প্রণম্যা। তিনি তাঁকে মাতৃভাবে দেখেন। কারণ পুরুরবার সঙ্গে সংসর্গের ফলে আয়ু জন্মগ্রহণ করেন। আয়ুর প্রপৌত্র হলেন পুরু। অর্জুন তাঁরই বংশধর। সেই যুক্তিতে উর্বশী অর্জুনের মাতৃতুল্যা। অর্জুনের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে উর্বশী তাঁকে অভিশাপ দিলেন যে, তিনি সম্মানহীন নপুংসক নর্তক হয়ে স্ত্রীলোকের মধ্যে বিচরণ করবেন। উর্বশীর অভিশাপে অর্জুন বিভ্রান্ত বোধ করেন এবং ইন্দ্রের শরণাপন্ন হন। ইন্দ্র অর্জুণের প্রশংসা করে বলেন, তিনি ধৈর্যে ঋষিদেরকেও পরাজিত করেছেন। তবে উর্বশীর অভিশাপ তাঁর কাজে লাগবে। অজ্ঞাতবাসের সময়ে অর্জুন এক বছর নপুংসক নর্তক হয়ে কাটাবেন। পরে আবার পুরুষত্ব ফিরে পাবেন।