বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে অজস্র মন্দির। আর কোনো কোনো মন্দিকে কেন্দ্র করে প্রচলিত আছে বহু প্রাচীন কিংবদন্তি। তেমনই একটি মন্দির হলো গোঘাটের মন্দির।
সবুজ গাছ গাছালি ও তিন দিক জলাশয় দিয়ে ঘেরা গ্রামের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কালী মন্দির (Kali Temple)। জনশ্রুতি অনুযায়ী প্রায় এক হাজার বছর আগে বর্ধমানের (Bardwan) রাজ বংশের বংশধর সাধক সন্ন্যাসী অহরলাল গোস্বামী আগাই গ্রামে গড় তৈরি করে তৎকালীন সময়ে জঙ্গলের ভিতর মা কালীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। শুরু হয় মা কালীর আরাধনা।
এই আগাই গ্রামের গোস্বামী পরিবারের বর্তমান সদস্যদের দাবি প্রায় এক হাজার বছর আগে থেকে বংশপরম্পরা ধরে প্রাচীন প্রথা মেনেই একই রীতিনীতিতে মা কালীর পুজো অর্চনা করে আসছেন। গোস্বামী পরিবারের এক সদস্য উৎপল কান্তি গোস্বামী জানান তৎকালীন বর্ধমানের কোনও এক রাজা তাঁর বংশধরকে দিয়ে গোঘাটের এই আগাই গ্রামে চারটি জলাশয় কেটে গড় প্রতিষ্ঠা করে মা কালীর পুজো প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই সময়ে আগাই গ্রাম ছিল জঙ্গলে ঘেরা পায়ে হাঁটা পথ, এমনকী গ্রামের জনসংখ্যাও ছিল খুবই কম। সন্ধ্যের পর এই গ্রামে রাস্তা দিয়ে মানুষ যাতায়াত করত না। ডাকাতের ভয়ে মানুষ আতঙ্কে থাকতেন। জানা যায় সেই সময় তাদেরই বাড়ির কাছে একটি বৃহৎ পুকুরে পাড়ে বিশাল এক নিম গাছ ছিল। সেই নিম গাছের তলাতেই মা কালীর প্রথম পুজো হতো। এই নিম গাছের তলায় ডাকাত দল পুজো করে ডাকাতি করতে যেত। নিম গাছের তলায় পুজোর পর মূল মন্দিরে দেবীর আরাধনা হত। এখনও রীতি প্রচলিত আছে।নিমগাছের নিচে যখন পুজোপাঠ শুরু হয় তখন গোট গ্রাম নিশুতি হয়ে যায়। অন্ধকারে গোটা গ্রাম ঢেকে যায়। কারুর বাড়িতে কোনও আলো জ্বলে না। একটা গা ছমছমে ও রহস্যময় পরিবেশ পুরোহিত ঠাকুর নিমগাছের তলায় মা কালিকে আহ্বান জানান।