কার্তিক – তিনি শিব ও পার্বতীর সন্তান এবং গণেশের সহোদর। কার্তিক পৌরাণিক দেবতা। প্রাচীন ভারতে সর্বত্র কার্তিক পূজা প্রচলিত। ভারতে তিনি এক প্রাচীন দেবতা রূপে পরিগণিত হন। পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার বাঁশবেড়িয়ার কার্তিক পুজো জগৎ বিখ্যাত। এখানে কার্তিক সংক্রান্তি থেকে ৩ দিন পূজা এবং চতুর্থ দিন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। ভগবান কার্তিক মুরুগানস্বামী নামেও পরিচিত। শিব কার্তিককে শিক্ষকের রূপে মেনে নিয়ে জগতের মূল রহস্য জানতে নিজে একজন ছাত্রের মতো আচরণ করেছিলেন এবং মনোযোগ দিয়ে তা শ্রবণ করছিলেন, দেবী পার্বতী পুত্রকে “স্বামীনাথ” নামটি দিয়ে উচ্চপদে সম্মানিত করেন ( এই নামের অর্থ হল “শিবের শিক্ষক” )। ভগবান কার্তিক কৈলাসে শিবের আসনেই তখন বিরাজমান ছিলেন।
কার্তিক প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেবতা, উত্তর ভারতে মহাসেন এবং কুমার হিসাবে উপাসনা করা হয় এবং প্রধানত তামিলনাড়ু রাজ্য এবং দক্ষিণ ভারতের অন্যান্য অংশ, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং মরিশাসে মুরুগান হিসাবে পূজা করা হয়। তার অন্যান্য নামগুলো হলো কৃত্তিকাসুত, আম্বিকেয়, নমুচি, মুরুগান, শিখিধ্বজ, অগ্নিজ, বাহুলেয়, ক্রৌঞ্চারতি, শর্জ, তারকারি বা তারকাসুরমর্দী, শক্তিপাণি, বিশাখ, ষড়ানন, গুহ, ষান্মাতুর, কুমার, সৌরসেনা, দেবসেনাপতি গৌরীসুত, আগ্নিক, ভৌরবসূতানুজ, মহাকুমাররাজ, গণেশানুজ ইত্যাদি। কার্তিকের মূর্তিতে বিস্তর বিভিন্নতা দেখা যায়; তাকে সাধারণত চিরযৌবনপ্রাপ্ত যুবক হিসেবে চিত্রিত করা হয়। পারবনি নামের একটি ময়ূর বাহনে আসীন অথবা তার পাশে দেখা যায়। হাতে একটি শক্তিশূল (যা তার মা পার্বতী তাকে দিয়েছিল) কখনো মস্তক বা ব্যানারের উপর একটি মোরগের চিহ্নযুক্ত থাকে। বেশিরভাগ মূর্তী বা চিত্রে থাকে এক মাথার দেখা গেলেও কিছু ক্ষেত্রে তাকে ৬টি মাথার দেখানো হয়, যা তার জন্মকে ঘিরে কিংবদন্তীরই প্রতিফলন।
