চলুন একবার ছুটে যাই উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়। তাহলেই সমস্ত বিষয়টা পরিষ্কার হবে।মনে পড়ে ‘রাজু বন গ্যায়া জেন্টলম্যান’ ছবিতে নানা পাটেকরের চরিত্রটি? পথে পথে ঘুরে ‘জয়’ নামের সেই মানুষটি সঠিক পথের সন্ধান দিত। সীমান্তবর্তী বনগাঁ বাজারের বাসিন্দা শ্রীধর রায় সেই চরিত্রটি থেকে প্রভাবিত হয়েছিলেন কিনা জানা নেই। তবে তিনিও এই পেশাকেই বেছে নিয়েছেন। ‘সততার সঙ্গে সু-বুদ্ধি বিক্রি’ করেই সংসার চালান তিনি। চাঁপাবেড়িয়া হাই স্কুল সংলগ্ন এলাকায় বাস শ্রীধরের। রীতিমতো পোস্টার লাগিয়ে নিজের এই অনন্য পরিষেবার প্রচার করছেন তিনি। কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক কী? জানা যাচ্ছে, লকডাউনের পর বাবাকে হারিয়ে পড়তে হয়েছিল অন্ধকারে। সংসারের দায়িত্ব পুরোপুরি এসে পড়ে তাঁরই কাঁধে। শুরু করেন দোকানদারি। সেই দোকানে শিশুদের জন্য নানা রকম খেলনা থেকে শুরু করে হোমিওপ্যাথির ওষুধপত্র- সবই মিলত। এখনও মেলে। কিন্তু সেই সঙ্গেই মেলে আরও এক ‘জরুরি’ পণ্য- সুবুদ্ধি!
দোকানের সামনে এলেই আপনার চোখে পড়বে পোস্টার- ‘সততার সঙ্গে সু-বুদ্ধি বিক্রি করা হয়’। সেই সঙ্গেই লেখা রয়েছে ‘পারিবারিক অশান্তি, শারীরিক-মানসিক এবং সামাজিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা’। তবে এরই পাশাপাশি একেবারে শেষে রয়েছে বিশেষ দ্রষ্টব্য- ‘বুদ্ধির প্রয়োগ ও ফলাফলের দায়িত্ব বুদ্ধিদাতার নয়’। কেমন ‘সুবুদ্ধি’ দেন শ্রীধর? মানুষের বিভিন্ন পারিবারিক, সামাজিক, মানসিক এমনকী শারীরিক সমস্যা মোকাবিলার উপায় বাতলে দেন তিনি। আর সেই পরামর্শ নিতে রীতিমতো ভিড় জমে যায় দোকানে। পারিশ্রমিকও সামান্য। এতেই মেলে নানা জটিল পরিস্থিতি সামলানোর উপায়, সম্পর্ক-সংক্রান্ত দিকনির্দেশ এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ।
