আগামী ২৮ থেকে ৩১ অক্টোবর ছটপুজো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ছট পুজোর ইতিহাস। ছট পূজার উৎস সম্পর্কে দুটি প্রধান বিশ্বাস প্রচলিত আছে: প্রথমত, পুরাণে বলা হয় যে ভগবান রাম ও সীতা সূর্যদেবতার উদ্দেশ্যে এই পূজা করেছিলেন, যা পরবর্তীতে ছট পূজায় বিবর্তিত হয়। দ্বিতীয়ত, মহাভারতের মতে দ্রৌপদী ধম্য ঋষির পরামর্শে সূর্যকে পূজা করে অক্ষয় পাত্র লাভ করেছিলেন এবং মহাবীর কর্ণও কোমর সমান জলে দাঁড়িয়ে সূর্যোপাসনা করতেন, যা ছট পূজার সাথে সম্পর্কিত। এছাড়াও, ছট পূজার উৎপত্তিকে আরও একটি পৌরাণিক কাহিনীর সাথেও যুক্ত করা হয়, যেখানে রানী মালিনীকে দেবসেনা বা ছটমাতা সন্তান লাভের ও সুরক্ষার জন্য সূর্যদেবতা ও নিজেকে পূজা করতে বলেন।
** ছট পূজার ইতিহাস ও তাৎপর্য:
- রামায়ণ ও মহাভারতের যোগ:
রামায়ণের কাহিনি অনুসারে, রাবণ বধের পর যখন রাম ও সীতা অযোধ্যায় ফিরে আসেন, তখন পাপ থেকে মুক্তির জন্য তাঁরা সূর্যদেবতার উদ্দেশ্যে ছট পূজা করেছিলেন। - মহাভারতে উল্লেখ আছে যে, দ্রৌপদী তার পরিবারের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্যের জন্য ধম্য ঋষির পরামর্শে সূর্যদেবকে আরাধনা করেন এবং এর মাধ্যমে তিনি একটি অক্ষয় পাত্র লাভ করেছিলেন। এছাড়াও, মহাবীর কর্ণ কোমর পর্যন্ত জলে দাঁড়িয়ে সূর্যদেবতার উপাসনা করতেন, যা ছট পূজার একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। ** ছটমাতা বা দেবসেনার গল্প:
একটি পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, দেবসেনা নিজেকে একজন দেবী হিসেবে পরিচয় দিয়ে এক রানীকে তার এবং সূর্যদেবতার পূজা করতে বলেন। এর ফলে রানী সন্তান লাভ করেন এবং সেই থেকে ছট পূজার প্রচলন শুরু হয়। - সূর্যদেব ও ছটমাতার পূজা:
ছট পূজা মূলত সূর্যদেব এবং তার বোন ছটি মায়ী (বা ছটি মাতা) কে উৎসর্গীকৃত একটি উৎসব। - বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, ছটি মায়ী শিশুদের অসুস্থতা থেকে রক্ষা করেন এবং দীর্ঘ জীবন ও সুস্বাস্থ্য প্রদান করেন।
- উৎসবের নাম ও সময়:
এই উৎসবটি হিন্দু পঞ্জিকার কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠ দিনে অনুষ্ঠিত হয়, যে কারণে এর নাম ‘ষষ্ঠী’ থেকে ‘ছট’ বা ‘ছট পূজা’ হয়েছে। ** বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচলন: - ছট পূজা প্রধানত বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ এবং নেপালের দক্ষিণ অংশে উদযাপিত হয়। এছাড়াও, যেখানে হিন্দি ভাষাভাষী মানুষেরা বাস করেন, সেখানেও এই উৎসব প্রচলিত আছে।