পূজায় মূলত সূর্য দেবতা পূজিত হন। পাশাপাশি সূর্যদেবের বোন বলে বিবচিত হয় ছঠি মাইয়া। ধর্মশাস্ত্র বলছে, ছঠি মাইয়া হলেন ব্রহ্মার মানস কন্যা, যিনি সন্তানদেরকে রক্ষা করেন, আর আশীর্বাদ দেন। সূর্যদেব আবার ধন, স্বাস্থ্য এবং জীবনের শক্তি প্রদান করেন। তাই এই পূজার মাধ্যমে ভক্তরা তাদের পরিবারের সুখ-শান্তি এবং বিশেষ করে সন্তানদের জন্য মঙ্গল কামনা করেন।
চারদিন ধরে ধাপে ধাপে এই ব্রত পালন করা হয়। ব্রতগুলি হলো – নহায়-খায়,খরনা,সন্ধ্যা অর্ঘ্য,ঊষা অর্ঘ্য।
- নহায়-খায় (২৫ অক্টোবর): এই দিনটিকে শুদ্ধিকরণের দিন বলা হয়। ভক্তরা নদী বা পুকুরে স্নান করে পবিত্র হন। এক বেলা সাত্ত্বিক আহার গ্রহণ করা হয়। ঐতিহ্য অনুযায়ী, এই দিনে লাউ-ভাত ও ছোলার ডাল খাওয়া হয়।
- খরনা (২৬ অক্টোবর): এই দিনটি থেকে কঠিন ব্রত শুরু হয়। ব্রতী বা উপবাসী মহিলারা সারা দিন নির্জলা উপবাস রাখেন। সূর্যাস্তের পর গুড় দিয়ে তৈরি বিশেষ পায়েস বা ক্ষীর, রুটি এবং ফল দিয়ে উপবাস ভঙ্গ করা হয়। এই প্রসাদ গ্রহণের পরই ৩৬ ঘণ্টার কঠোর নির্জলা উপবাস শুরু হয়।
- সন্ধ্যা অর্ঘ্য (২৭ অক্টোবর) – মূল ছট পুজো: এটি ছট পুজোর প্রধান দিন। সন্ধ্যাবেলা ভক্তরা নদী বা জলাশয়ের ঘাটে ভিড় করেন। বাঁশের কুলো বা ডালায় ঠেকুয়া, ফল, আখ, নারকেল ইত্যাদি সাজানো হয়। কোমর পর্যন্ত জলে দাঁড়িয়ে অস্তগামী সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদন করা হয়। এই দিন সূর্যকে ধন্যবাদ জানানো হয় এবং পরিবারের সুখ-শান্তি কামনা করা হয়।
- ঊষা অর্ঘ্য (২৮ অক্টোবর) – ব্রত ভঙ্গ: চার দিনের উৎসবের শেষ দিন এটি। ভোর বেলা আবার ঘাটে গিয়ে জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে উদীয়মান সূর্যকে অর্ঘ্য দেওয়া হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে অর্ঘ্য নিবেদনের পরই ব্রত সম্পন্ন হয়। এর পর ব্রতী মহিলারা প্রসাদ গ্রহণ করে ৩৬ ঘণ্টার উপবাস ভঙ্গ করেন।
