বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরটি ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দেওঘ র জেলার অবস্থিত। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, রাবণ হলো শিবের পরম ভক্তের মধ্যে একজন তাই রাবনের অনুরোধে শিবের কৃপায় কৈলাশ পর্বত থেকে রাবণ শিবকে নিয়ে যাচ্ছিল লিঙ্গ রুপে। কিন্তু শিব পুত্র গণেশের ছলনা তে রাবণ শিবলিঙ্গ নিয়ে যেতে পারেনি লঙ্কায় সেই শিবলিঙ্গ বৈদ্যনাথ নামে আর্বিভাব হয়।
অন্যদিকে শিবপুরানের কাহিনি অনুসারে, ত্রেতাযুগে লঙ্কার রাজা রাবণ চেয়েছিলেন যে তার রাজধানী হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং সকল শত্রুর থেকে মুক্ত। তার মনে হয়েছিল, যদি শিব সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু না করেন, তবে তা হওয়া সম্ভব নয়। তিনি শিবের তপস্যা শুরু করেন। শিব সন্তুষ্ট হয়ে তাকে একটি শিবলিঙ্গ লঙ্কায় প্রতিষ্ঠার জন্য দান করেন। শিব বলেছিলেন, লিঙ্গটি অন্য কোথাও যেন স্থাপন না করা হয় এবং অন্য কারোর হাতে না দেওয়া হয়। এমনকি লঙ্কায় যাত্রাপথেও কোথাও যেন না থামা নয়। রাবণ যদি অন্য কোথাও পৃথিবীতে এই লিঙ্গটি স্থাপন করেন, তবে সেটি সেখানেই চিরতরে থেকে যাবে। রাবণ খুশি হয়ে লিঙ্গটি নিয়ে লঙ্কার পথে যাত্রা করেন। অন্যান্য দেবতারা এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করলেন। শিব যদি রাবণের সঙ্গে লঙ্কায় যান, তবে রাবণ অজেয় হবেন। তখন তিনি পৃথিবীর উপর অকথ্য অত্যাচার চালাবেন। তাই তারা রাবণকে ছলনা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন। দেবতারা জলদেবতা বরুণকে রাবণের উদরে প্রবেশ করতে অনুরোধ করলেন। তখন কৈলাস পর্বত থেকে ফেরার পথে রাবণের মুত্রের বেগ পেল।
তখন তিনি এমন কাউকে খুঁজতে লাগলেন, যাকে খানিকক্ষণের জন্য লিঙ্গটি ধরতে দেওয়া যায়। বিষ্ণু তখন ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে রাবণের কাছে এলেন। রাবণ তার হাতেই লিঙ্গটি দিয়ে মূত্র ত্যাগ করতে বসলেন। কিন্তু মূত্র ত্যাগ করতে রাবণের অনেক সময় লাগল। এদিকে ব্রাহ্মণবেশী বিষ্ণু লিঙ্গটি মাটিতে স্থাপন করলেন। এই স্থানেই এখন বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ অবস্থিত।রাবণ লিঙ্গটি মাটি থেকে তোলার অনেক চেষ্টা করলেন। কিন্তু তিনি একচুলও সেটি নড়াতে অসমর্থ হলেন। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে তিনি জোরে লিঙ্গটি নড়ানোর চেষ্টা শুরু করলেন। কিন্তু বুড়ো আঙুলের আঘাতে লিঙ্গের একটুকরো অংশ ভেঙে ফেলা ছাড়া আর কিছু করতে তিনি অসমর্থ হলেন। পরে অনুতপ্ত হয়ে তিনি কৃতকর্মের জন্য শিবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। এদিকে রাবণ যে শিবলিঙ্গটি লঙ্কায় নিয়ে যেতে পারলেন না, তা দেখে দেবতারা আনন্দিত হলেন।
