‘ভাইফোঁটা’ একটা পারিবারিক বন্ধনের উৎসব। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ ও দ্বিতীযয়া তিথিতে পালিত হয়। বোন তার ভাইয়ের কপালে চন্দন, কেশর ও গঙ্গাজল মিশিয়ে ফোঁটা দেন। অনেক সময় বাঁ হাতের কনিষ্ঠা বা কড়ে আঙুল ব্যবহার করা হয়। ভাইফোঁটা হলো ভাই-বোনের সম্পর্কের পবিত্রতার এক উৎসব, যা কালীপূজার পর কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পালিত হয়। এই উৎসবে বোনেরা ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় কপালে চন্দন ফোঁটা দেন, আর ভাইয়েরা তাদের বোনকে রক্ষা করার প্রতিজ্ঞা করেন। এই উৎসবটি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন ‘ভ্রাতৃদ্বিতীয়া’, ‘ভৌ বিজ’, এবং ‘ভাইদুজ’।
ভাইফোঁটা, যা ‘ভ্রাতৃদ্বিতীয়া’ বা ‘যমদ্বিতীয়া’ নামেও পরিচিত, ভাই ও বোনের মধ্যে ভালোবাসার বন্ধন সুদৃঢ় করার একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী উৎসব। এটি দীপাবলি উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করে এবং এর মূল উদ্দেশ্য হলো ভাই-বোনের মধ্যে নিখাদ ও পবিত্র সম্পর্ককে সম্মান জানানো। এই উৎসবের উৎপত্তি সম্পর্কে একটি প্রচলিত ধারণা হলো, যমুনা নদী ও তাঁর ভাই যমরাজ এই দিনে মিলিত হয়েছিলেন। যমুনা ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় ফোঁটা দিয়েছিলেন এবং যমরাজ প্রতি বছর এই দিনে মর্ত্যে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই ঘটনা থেকেই ভাইফোঁটার প্রথা শুরু হয় বলে মনে করা হয়।
এই দিনে বোনেরা সাধারণত নতুন পোশাকে সেজে ভাইয়ের জন্য একটি ‘থালা’ সাজান, যেখানে থাকে চন্দন, গঙ্গাজল, ধান-দূর্বা,আতপ চাল এবং বিভিন্ন মিষ্টি। ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় মিষ্টি খাওয়ানো হয় এবং ভাই তার বোনকে উপহার দেয়। আজও ভাইফোঁটা ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধনে পালিত হয়। ভাই-বোনের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার পাশাপাশি এই উৎসবটি ভালোবাসা ও একতার বার্তা বহন করে। ভাইয়েরা তাদের বোনকে রক্ষা করার প্রতিজ্ঞা করেন এবং বোনেরা ভাইয়ের দীর্ঘায়ু ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।