প্রতি বছর বহু মানুষ অষ্টমীর দিন উপস্থিত হন বেলুড়মাঠে শুধু কুমারীপুজো দেখার জন্য। জীবিত কুমারীকে দেবী দুর্গা রূপে কল্পনা করার ভাবনা প্রথম আসে স্বামী বিবেকানন্দের কল্পনায়। এর কোনো বৈদিক উদাহরণ নেই, তবুও এখনও সেই রীতি অব্যাহত। বেলুড়মঠে শারদীয়া দুর্গাপূজা ঐতিহ্যগত তাৎপর্য হলো ১৯০১ সালে স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দের দ্বারাই এই পূজা প্রথম অনুষ্ঠিত হয় এবং পরম আরাধ্য শ্রী শ্রী মা সারদা দেবী পূজার সময় বেলুড়মঠে উপস্থিত ছিলেন স্বামীজীর ইচ্ছা অনুসারে। স্বয়ং শ্রীশ্রী মাও এই সব কুমারীদের ঐদিন “এয়োরানী” পুজো করেন। স্বামীজি কুমারী পূজা বিষয়ে কিছু আশ্চর্য কাহিনী ও জানা যায় কাশ্মীর ভ্রমণকালে স্বামীজি এক মুসলমান মাঝির শিশুকন্যাকে ও কুমারী পূজা করেন বর্তমানে বেলুড়মঠে অষ্টমী পুজোর দিন ৫ থেকে ৭ বছরের একটি কুমারীকে প্রতিমার পাশে বসিয়ে দেবীজ্ঞানে পুজো করা হয়। সালংকারা বেনারসি শাড়ি পরিহিতা একটি জলজ্যান্ত কুমারীকে সাক্ষাৎ মা দূর্গা পুজা করে সকলের মধ্যে ভাব সঞ্চার করা হয়। সে সময় পূজা দেখতে ওই দিন বেলুড়মঠে খুব ভীড় হয়।
শ্রীশ্রী মায়ের নামেই এই পূজার সংকল্প করা হয় এবং আজও সেই ধারায় চলে আসছে। আসলে সন্ন্যাসী গণ সংকল্প করে কোন পূজা বা বৈদিক ক্রিয়া কান্ড করার অধিকারী নন বলেই আদর্শ গৃহস্থাশ্রমী শ্রীশ্রীমার( যদিও ত্যাগ তপস্যায় তিনি সন্ন্যাসীর ও শিরোমনি।) নামেই বেলুন মঠে দূর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি খুবই অভিনব এই কারণে যে শ্রী শ্রী মায়ের দেহত্যাগের এত বছর পরেও সেই একই ধারায় বেলুড় মঠে পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে অথবা স্বামীজি যে কল্পনা করতেন শ্রী শ্রী মাকে জ্যান্ত দুর্গা রূপে প্রতি বছর মৃন্ময়ী মূর্তিতে কি চিন্ময়ী অধিষ্ঠান হয়।