পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় বাঙাবি ধর্মগুরু হলেন অনুকূলচন্দ্র ঠাকুর। পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক অনুকূলচন্দ্র চক্রবর্তী বুঝতে পেরেছিলেন যে মানুষ শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক ব্যাধিতে আক্রান্ত। এই তিনটির মধ্যে তিনি মানসিক ব্যাধির চিকিৎসার ওপর জোর দেন। কারণ তিনি মনে করতেন যে মন সুস্থ থাকলে শরীর সুস্থ থাকবে। মানুষের আত্মিক উন্নতির জন্য তিনি কীর্তনদল গঠন করেন। এই কীর্তনদলে তিনি কিছু উপদেশ দেন, যা বই আকারে প্রকাশিত হয়। তার পর থেকেই সকলে তাঁকে ‘ঠাকুর’ বলে সম্বোধন করতে শুরু করেন। সত্যনিষ্ঠা, সৎকর্ম এবং দীক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে তিনি মানুষের আত্মিক উন্নতির চেষ্টা করেন। এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তিনি পাবনায় সৎসঙ্গ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জনকল্যাণের স্বার্থে নানাবিধ কাজ করেন তিনি। উল্লেখ্য, ১৮৮৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পাবনা জেলার হেমায়েতপুরে জন্মগ্রহণ করেন অনুকূল চন্দ্র চক্রবর্তী, যিনি পরবর্তীকালে অনুকূল চন্দ্র ঠাকুর নামে পরিচিত হন। এখানে অনুকূলচন্দ্র ঠাকুরের কিছু বাণী তুলে ধরা হল।
১. কারও সাহায্য যখন তুমি না-পাও, তখন পিতার কাছে যাও। তাঁর সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে তোমাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকবে। কৃতজ্ঞতা বোধ তাকতে হবে, নচেৎ অমানুষ সেই সন্তান।
২. যার কাছ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা পেয়ে, পালন পোষণ পেয়ে আজ আমি পূর্ণ, তার শরীর হতে আমার শরীর আর এই মহান মানুষটিকেই আমরা পিতা বলি।
৩. কেউ যদি তোমার নিন্দা করে করুক, কিন্তু খেয়াল রেখো, তোমার চলন চরিত্রে নিন্দনীয় কিছু যেন কোনও ক্রমেই স্থিতিলাভ করতে না-পারে। নিন্দা ব্যর্থ হয়ে উঠবে।
৪. যদি সাধনায় উন্নতি লাভ করতে চাও, তবে কপটতা ত্যাগ করুন।
৫. কপট ব্য়ক্তি অন্যের কাছে সুখ্যাতির আশায় নিজেকে নিজেই প্রবঞ্চনা করে। অল্প বিশ্বাসের দরুণ অন্যের দান হতেও প্রবঞ্চিত হয়।
৬. অশিক্ষিতকে শিক্ষা দেওয়া বরং অনেক সোজা। কুশিক্ষিতের শিক্ষক হওয়া কঠিন।
৭. সরল ব্যক্তি ঊর্ধ্বদৃষ্টি সম্পন্ন চাতকের মতো। কপটী নিম্নদৃষ্টি সম্পন্ন শকুনের মতো। ছোট হও, কিন্তু লক্ষ্য উচ্চ হোক। বড় ও উচ্চ হয়ে নিম্ন দৃষ্টিসম্পন্ন শকুনের মতো হওয়ায় লাভ কি?