অম্বুবাচী হিন্দুধর্মের বাৎসরিক উৎসব। লোকবিশ্বাস অনুসারে ,আষাঢ় মাসের ৭ তারিখে মৃগশিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হলে পৃথিবী বা ধরিত্রী মা রজঃস্বলা হন। এই সময়টিতে অম্বুবাচী পালন করা হয়। অম্বুবাচী” অর্থ জল দিয়ে উচ্চারিত এবং এর অর্থ এই যে এই মাসে প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত পৃথিবীকে উর্বর এবং প্রজননের জন্য প্রস্তুত করে। এই সময়কালে প্রতিদিনের পূজা স্থগিত থাকে। খনন, লাঙ্গল, বীজ বপন এবং ফসল রোপণের মতো সমস্ত কৃষি কাজ নিষিদ্ধ। আষাঢ়ের ৭ তারিখে এই অম্বুবাচী উৎসব পালিত হয়। বিশ্বাস করা হয়, ওই দিনে মৃগশিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হয়। আর তাতেই ধরিত্রী সুফলা হয়, রজস্বলা হয়। সেই দিনেই পালিত হয় অম্বুবাচী। রবিবার পড়ে গিয়েছে অম্বুবাচী তিথি। অম্বুবাচী তিথি শুরু হলে তা পর পর চলে এই উৎসবের পর্ব। ২২ জুন, ২০২৫ সালে শুরু হয়েছে অম্বুবাচীর তিথি। এদিন দুপুর ২ টো ৫৭ মিনিটে শুরু হয়ে গিয়েছে এই অম্বুবাচী তিথি। আর তিথি শেষ হবে ২৫ জুন অর্থাৎ ১০ আষাঢ় রাত ৩ টে ২১ মিনিটে। সেই সময় এই অম্বুবাচীর নিবৃত্তি হবে।
মনে করা হয়,ঋতুমতি মহিলাদের মতো করেই অম্বুবাচীর সময় ধরিত্রীও হন ঋতুমতী। যেভাবে ঋতুমতী মহিলারা অশুচি পালন করেন, সেই মতো মনে করা হয়, এই সময় ধরিত্রীও অশুচি থাকে। ফলে, এই সময় পৃথিবীর বুকে, মাটির ওপর কোনও সন্ন্যাসী, যোগী পুরুষ, বিধবা মহিলারা আগুনের রান্না করা কিছু খান না। এই সময়কাল তাঁরা ফলমূল খেয়ে কাটান। অসমের কামাক্ষ্যায় এই সময়কালে ধূমধাম সহকারে পুজো করা হয়। শুধু সেখানেই নয়, বাড়ির ঠাকুরের বেদী থেকে শুরু করে বিবিন্ন মন্দিরে এই সময়ের মাতৃশক্তির দেবীদের পুজো ঘিরে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম থাকে। কালিকা পূরাণ অনুসারে কামাক্ষ্যা মন্দিরে সতীর সঙ্গে বিয়ে হয় শিবের। তাণ্ডবের সময় এখানেই দেবীর দেহাংশের একটি অংশ পড়ে। তারপর থেকেই কামাক্ষ্যা মন্দির দেশের অন্যতম সতীপীঠ।