বাংলার শিলিগুড়ি অঞ্চলকে মানচিত্রের নিরিখে ‘চিকেন নেকস’ বলা হয়। আর এই চিকেন নেকসের দিকে লক্ষ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও চিনের। এবার সেই দিকে গভীর নজর দিলো ভারত সরকার। এই অঞ্চলটিকে এখন একটি পূর্ণাঙ্গ সামরিক দুর্গে পরিণত করা হয়েছে। বামনি, কিষাণগঞ্জ ও চোপড়ায় তিনটি গুরুত্বপৃত সেনা দুর্গ গড়ে তোলা হয়েছে এবং সুকনাতে টি-৯০ ট্যাঙ্কসহ ত্রিশক্তি কোর মোতায়েন রয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল এবং রাশিয়ার অত্যাধুনিক এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এখানে স্থাপন করা হয়েছে। হাসিমারা এয়ারবেসে রাফাল ও মিগ যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে দ্রুত আকাশপথে সাড়া দেওয়ার জন্য। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের পাকিস্তানি সামরিক মহলের সঙ্গে যোগাযোগ এবং চিনের সাথে বাড়ন্ত ঘনিষ্ঠতাই ভারতকে এই ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। এছাড়াও, লালমণিরহাটে চিনা বায়ুসেনা ঘাঁটির সম্ভাবনা এবং তিস্তা নদীর জল বণ্টন নিয়ে চলমান টানাপোড়েন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব এই করিডোরের নিরাপত্তা চিন্তায় পড়েছে।
আকাশ প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে বহুস্তরীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। এস-৪০০ সিস্টেম ছাড়াও রাশিয়ার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল, ইজরায়েলি মিডিয়াম রেঞ্জ মিসাইল এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থার তৈরি ‘আকাশ’ মিসাইল করিডোর সংলগ্ন এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া, ‘অশনি প্লাটুন’ নামে একটি অত্যাধুনিক ড্রোন ইউনিট এবং কামিকাজে ড্রোনও সীমান্ত রক্ষায় যুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে ৩৬০ ডিগ্রি নজরদারি ও প্রতিক্রিয়া সম্ভব। সামগ্রিকভাবে, ভারতের বার্তা স্পষ্ট: শিলিগুড়ি করিডোর ভারতের অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটিকে সুরক্ষিত রাখতে দেশ যেকোনো প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ ও সামরিক প্রস্তুতি নিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। উত্তপ্ত বক্তব্যের জবাব দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই প্রায় ৮,১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অত্যাধুনিক ও দুর্ভেদ্য করে তোলা হয়েছে, যা যেকোনো সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় ভারতের সক্ষমতার একটি সুস্পষ্ট প্রদর্শন।
