উত্তর কলকাতার কলেজস্ট্রিটে অবস্থিত ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি বাংলার একটি প্রাচীন ও সুপ্রতিষ্ঠিত কালীবাড়ি। প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তপ্রাণ মানুষ এই মন্দিরে পুজো দেন। এটি কলকাতার একটি প্রাচীন কালী মন্দির যা প্রায় ১৭০৩ সালে উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী নামে এক তান্ত্রিক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এখানে মা সিদ্ধেশ্বরী পূজিত হন, যা মূলত শ্মশান ভূমিতে গড়ে উঠেছিল, এবং ‘ঠন ঠন’ শব্দ থেকেই এর নামকরণ হয়েছে, যা পরবর্তীকালে শঙ্কর ঘোষের মতো ধনাঢ্য ব্যক্তির সহায়তায় আরও উন্নত রূপ পায়।
- প্রতিষ্ঠা ও নামকরণ:
- প্রতিষ্ঠাতা: জনশ্রুতি অনুসারে, ১৭০৩ খ্রিষ্টাব্দে উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী নামের একজন তান্ত্রিক এই কালীমূর্তি গড়ে তোলেন।
- নামকরণ: তন্ত্র সাধনার সময় উচ্চারিত ‘ঠন ঠন’ ধ্বনি থেকেই এই স্থানের নাম হয় ‘ঠনঠনিয়া’।
স্থান: মন্দিরটি একটি শ্মশান বা শ্মশানভূমির (cremation ground) ওপর স্থাপিত হয়েছিল। - বিগ্রহ ও পূজা পদ্ধতি:
বিগ্রহ: এখানে মা সিদ্ধেশ্বরী কালী পূজিত হন। বিগ্রহটি মাটি দিয়ে তৈরি এবং প্রতি বছর নতুন করে গড়া হয় ও বিসর্জন দেওয়া হয়। - পূজা: এটি একটি জাগ্রত মন্দির এবং এখানে নিয়মিত পূজা হয়। মঙ্গলবার ও শনিবার এখানে বিশেষ ভিড় হয়।
- ঐতিহাসিক বিকাশ:
শঙ্কর ঘোষ: ১৮০৬ সালে শঙ্কর ঘোষ নামে এক ধনাঢ্য ব্যক্তি বর্তমান মন্দির ও পুষ্পেশ্বর শিবের আটচালা মন্দির নির্মাণ করেন এবং নিত্যপূজার ব্যয়ভার গ্রহণ করেন, যা মন্দিরকে আরও সুপ্রতিষ্ঠিত করে তোলে। - গুরুত্ব:
শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবও এই মন্দিরে আসতেন বলে জানা যায়, যা এর আধ্যাত্মিক গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এটি কলকাতার অন্যতম প্রাচীন এবং উত্তর কলকাতার একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক কেন্দ্র।
