বাংলার অন্যতম প্রতিষ্ঠিত কালীমন্দিরগুলির মধ্যে অবশ্যই অন্যতম একটি মন্দির হলো উত্তর ২৪ পরগনার আলেমবাজারের আদ্যাপীঠের মন্দির। আদ্যাপীঠ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল শ্রী অন্নদাচরণ ভট্টাচার্য (অন্নদা ঠাকুর) এবং তাঁর অনুগামীদের দ্বারা ১৯২০-এর দশকে (আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর ১৯২৮), যা মূলত মা কালী এবং শ্রী রামকৃষ্ণের প্রতি ভক্তি থেকে গড়ে ওঠে। এটি দক্ষিণেশ্বরের কাছে অবস্থিত একটি ত্রিকোণাকার, তিন ধাপের মন্দির যেখানে নিচের ধাপে রামকৃষ্ণ, মাঝে আদ্যামা (কালীর রূপ), এবং উপরে রাধাকৃষ্ণের মূর্তি রয়েছে – যা স্বপ্নে পাওয়া নির্দেশে নির্মিত এবং এটি সেবামূলক কাজের জন্য পরিচিত একটি আশ্রম ও মন্দির।
** আদ্যাপীঠের আদি কথা:
- প্রতিষ্ঠাতা: মূলত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ও কালীভক্ত শ্রী অন্নদাচরণ ভট্টাচার্য (অন্নদা ঠাকুর)। তিনি স্বপ্নে পাওয়া নির্দেশে এই মন্দির নির্মাণ করেন।
- প্রতিষ্ঠার সময়: ১৯২০-এর দশকে এর কাজ শুরু হয় এবং ১৯২৮ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
- উদ্দেশ্য: অন্নদা ঠাকুরের আদর্শ অনুযায়ী, এটি কেবল একটি মন্দির নয়, বরং মানবসেবার একটি কেন্দ্র, যেখানে অনাথ আশ্রম, স্কুল, দাতব্য চিকিৎসালয় ও দরিদ্রদের জন্য খাদ্য-বস্ত্র বিতরণের ব্যবস্থা ছিল।
- মন্দিরের গঠন ও বিশেষত্ব:
- তিন ধাপের মন্দির: মন্দিরটি তিনটি ধাপে তৈরি, যা তিনটি মন্দিরের সমন্বয়।
- প্রথম ধাপ (নীচে): শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের মূর্তি।
দ্বিতীয় ধাপ (মাঝে): ইডেন গার্ডেনের ঝিলে প্রাপ্ত আদ্যামায়ের (কালী) আদলে পদ্মাসনে শায়িত শিবের বুকে অষ্টধাতুর দেবীমূর্তি। - তৃতীয় ধাপ (উপরে): রাধাকৃষ্ণের যুগল মূর্তি।
আদ্যা মা: এখানে মা কালী আদ্যা রূপে পূজিত হন এবং তাঁর মূর্তিটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। - মূল মন্দিরে প্রবেশ: মূল মন্দিরটি সাধারণের জন্য দিনে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য খোলা থাকে।
- অবস্থান ও গুরুত্ব:
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের কাছে অবস্থিত, তাই ভক্তদের কাছে এর বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে।
এটি শুধু একটি তীর্থস্থান নয়, বরং অন্নদা ঠাকুরের আদর্শের প্রতীক ও সেবার পীঠস্থান।
