জগন্নাথ পুজোর ইতিহাস রহস্যময় ও প্রাচীন। এটি মূলত উপজাতিদের দেবতা বিশ্ববাসুকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে, যিনি পরে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের দ্বারা বিষ্ণুর রূপে পূজিত হন এবং পুরীর মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হন। এই পূজার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হলো রথযাত্রা, যা আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়।
জগন্নাথের উৎপত্তির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট-
উপজাতি দেবতা বিশ্ববাসু: কিংবদন্তি অনুসারে, জগন্নাথ মূলত বিশ্ববাসু নামের এক সাবার (উপজাতি) রাজা কর্তৃক পূজিত নীলামাধব নামক দেবতা ছিলেন।
রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের ভূমিকা: মালাবার রাজ্যের রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন স্বপ্নে নীলামাধবকে খুঁজে বের করার নির্দেশ পান। তিনি বহু অনুসন্ধানের পর বিশ্ববাসুর কাছ থেকে দেবতাটিকে উদ্ধার করেন এবং পুরীতে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
মূর্তির বিবর্তন: প্রথমে মূর্তিগুলো তৈরি হওয়ার পর, রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন সেগুলোকে ভাঙা বা অসম্পূর্ণ দেখে দুঃখিত হয়েছিলেন। তখন জগন্নাথ তাকে স্বপ্নে জানান যে তিনি এই রূপেই পূজিত হতে চান। এরপর থেকে এই অসম্পূর্ণ মূর্তিগুলোই পূজিত হয়ে আসছে।
জগন্নাথের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য
ত্রয়ী দেব-দেবী: পুরীর মন্দিরে জগন্নাথের সাথে তাঁর দাদা বলরাম এবং বোন সুভদ্রাকেও পূজা করা হয়।
রথযাত্রা: আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে রথে করে মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়, যা জগন্নাথের অন্যতম প্রধান উৎসব।
চৈতন্যদেবের প্রভাব: চৈতন্যদেবের মাধ্যমে জগন্নাথের পূজা বাঙালি সমাজে বিশেষভাবে পরিচিতি লাভ করে।
অতিরিক্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য-
নামের উৎপত্তি: ‘জগন্নাথ’ শব্দটির অর্থ হলো ‘জগতের নাথ’ বা ‘জগতের প্রভু’।
ঐতিহ্য: পুরীর জগন্নাথ মন্দির ভারতের অন্যতম চারটি ধামের মধ্যে একটি।
