রাস উৎসবের ইতিহাস মূলত শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, যেখানে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমকে কেন্দ্র করে বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় এই উৎসব পালিত হয়। এই উৎসবের উৎপত্তি ও বিকাশ বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব রীতিনীতি ও কিংবদন্তির মাধ্যমে হয়েছে, যেমন শান্তিপুরে অদ্বৈতাচার্য এবং পটাশপুরে রাজা চৌধুরী বজেন্দ্রনন্দন দাস মহাপাত্র-র ভূমিকা।
রাস উৎসবের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
- প্রাচীন বৈষ্ণবীয় ঐতিহ্য: রাস উৎসবের মূল ভিত্তি হলো বৈষ্ণব ধর্ম এবং শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণ। এর মাধ্যমে জীবাত্মার পরমাত্মার সাথে সম্পর্ক এবং প্রেমময় আধ্যাত্মিকতাকে তুলে ধরা হয়।
 - শান্তিপুরের রাস: শান্তিপুরের রাস উৎসবের সূচনা করেছিলেন অদ্বৈতাচার্য, যিনি নিজেকে শিবের অবতার মনে করতেন। কথিত আছে, শিব রাসলীলায় অংশ নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে কৃষ্ণ ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের প্রবেশ নিষেধ ছিল।
 - পটাশপুরের রাস: পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে প্রায় ৪০০ বছর আগে রাস উৎসবের সূচনা হয়। সেখানকার রাজা চৌধুরী বজেন্দ্রনন্দন দাস মহাপাত্র ওড়িশা থেকে তাঁর ধর্মগুরু মুকুন্দদেবকে আনেন। পরে মুকুন্দদেব শ্যামচাঁদ জীউর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই রাস উৎসবের শুরু হয়।
 - নবদ্বীপের রাস: নদিয়ার নবদ্বীপে প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাস উৎসব পালিত হচ্ছে, যেখানে ৪০০-এর বেশি দেবদেবীর আরাধনা করা হয়। এই উৎসবটি শাক্ত ও বৈষ্ণব উৎসবের এক মিলনক্ষেত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
- কোচবিহারের রাস: কোচবিহারের রাস মেলা এখানকার সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী উৎসবগুলির মধ্যে অন্যতম, যা প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়।
 
 - বাংলাদেশের রাস: বাংলাদেশে, বিশেষ করে মনিপুরী আদিবাসীদের মধ্যে রাস পূর্ণিমা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব, যেখানে রাসনৃত্যের আয়োজন করা হয়।
 
								
					