এই পুজোর সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত আছে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন। সেই কারণেই স্থানীয় মানুষের কাছে এই পুজোর মর্যাদাই আলাদা। পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ পুলিশের ভয়ে পাহাড়ের গুহায় লুকিয়ে থাকতেন অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা। পুরুলিয়ার সেই পাহাড়েই শুরু হয়েছিল কালীপুজো। গোপন আস্তানার এই পুজোতে বিপ্লবীরাও শামিল হতেন। শোনা যায়, কালীপুজোর দিন পাহাড়ে বসে বিপ্লবীরা সাধনা করতেন। পুরুলিয়ার ঝালদার শিলফোড় পাহাড়ের পুজো এবার ৮৪ বছরে পা দিল। এখনও পাহাড়ের উপরের কালী মন্দিরেই পুজো হয়। মায়ের টানে ১৬০টি সিঁড়ি বেয়ে ১৩০ ফুট উঁচুতে থাকা মন্দিরে ছুটে যান ভক্তরা। হাজার হাজার ভক্তের সমাগমে গমগম করে শিলফোড় পাহাড়। দেশ তখনও স্বাধীন হয়নি। ১৯৩৪ সালে পুরুলিয়ার ঝালদা শিলফোড় পাহাড়ে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে কালীপুজো শুরু করলেন রায়সাহেব প্রেমচাঁদ মোদক।
সেই পুজো এখন শিলফোড় পাহাড় সর্বজনীন কালীপুজো নামে পরিচিত। শুধু ঝালদার সাধারণ বাসিন্দারাই নন, এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত ঝালদা থানাও। কালীপুজোয় অন্নকূট হয় ঝালদা থানাতেই। ঝালদার তৎকালীন জমিদার প্রেমচাঁদ মোদক রায় সাহেব উপাধি দিয়েছিল ব্রিটিশরা। এরপর শ্যামা মায়ের আরাধনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। শিলফোড় পাহাড়ের মাথায় তৈরি হয় মন্দির। মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন জমিদার প্রেমচাঁদ মোদক। এদিকে শিলফোড় পাহাড়ের গুহাতে থাকতেন অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা। পুজোতে শামিল হন তাঁরাও। পুরোহিত ছিলেন রাধারমন চক্রবর্তী। মন্দিরে মা কালীর নিত্য পুজো হয়।