আজ মহা নবমী। আগামীকাল দশমী তেই দেবী বিসর্জন। দেবিমূর্তি বিসর্জনের আগে হিন্দু রমণীর দেবীকে সিঁদুর পরিয়ে নিজেরা নিজেদের মধ্যে সিঁদুর খেলায় মত্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু প্রশ্ন আর কোনো পুজোর বিসর্জনে তো এমন হয় না। কেন বিজয়াদশমীতে হয়? দশমীর সকালে দেবী দুর্গার বিসর্জনের আগে বিবাহিতা নারীরা মায়ের চরণে সিঁদুর নিবেদন করেন। আসলে দেবী এখানে মাতৃ রূপে নয় কন্যা রূপে পূজিতা। তাই সিদুর যেন অক্ষয় হয়, সংসারজীবন সর্বদা সুখের হয়, সেই কামনাতেই পরানো হয় সিঁদুরখেলা। এরপর সধবা মহিলারা একে অপরের কপালে, সিঁথিতে ও গালে সিঁদুর পরিয়ে দেন। হাসি-আনন্দে ভরে ওঠে পুরো পরিবেশ। মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলায়।
- হিন্দু সংস্কৃতিতে সিঁদুর সৌভাগ্য ও দাম্পত্যজীবনের প্রতীক। বিবাহিত নারীরা সিঁথিতে সিঁদুর পরে থাকেন স্বামীর দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার কামনায়। তাই দেবীর চরণে সিঁদুর অর্পণ মানে তাঁর কাছে ভক্তরা সংসারের মঙ্গল ও সুখী গৃহস্থজীবনের প্রার্থনা করেন।
- পুরান মতে – সিঁদুর ব্রহ্মার প্রতীক। ব্রহ্মা জীবনের সমস্ত কষ্ট দূর করে আনন্দে ভরে রাখেন বলেই হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয়। হিন্দু ধর্মে মনে করা হয়, সিঁথিতে সিঁদুর পরলে কপালে ব্রহ্মা অধিষ্ঠান করেন। এই কারণে দশমীর দিন সিঁদুর খেলার এই প্রচলন বলে মনে করেন অনেকে।
- সিঁদুর খেলা শুধু রঙিন উৎসব নয়, বরং প্রতীকীও। লাল সিঁদুর হলো শক্তি, সমৃদ্ধি, প্রেম ও প্রাণশক্তির প্রতীক। নারীরা যখন একে অপরকে সিঁদুর পরান, তখন তাঁরা পরস্পরের সুখ, দাম্পত্য মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
- সিঁদুর খেলার আরেকটি বড় দিক হল নারীদের মধ্যে মিলন ও বন্ধন। এ সময় বয়স বা সামাজিক অবস্থার পার্থক্য থাকে না। সবাই একই রঙে রাঙিয়ে ওঠেন, যা সমাজে সমতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের প্রতীক হয়ে ওঠে।