রামায়নে উর্মিলা ছিলেন লক্ষনের স্ত্রী। কবি বাল্মীকি উর্মিলাকে খুব বেশি কাহিনীতে নিয়ে আসেন নি। জনশ্রুতি অনুযায়ী, লক্ষ্মণ যখন রাম ও সীতার বনবাসের সঙ্গ দেন, তখন উর্মিলা তার স্বামীকে তার ভাই ও বোনদের সেবার জন্য বাড়িতে থাকার অনুরোধ করেন। এতে উর্মিলা ১৪ বছর একটানা ঘুমিয়ে লক্ষ্মণের জেগে থাকার সময়টুকু গ্রহণ করেন, যা উর্মিলা নিদ্রা নামে পরিচিত এবং এটি লক্ষ্মণের সেবার প্রতি তার এক অতুলনীয় আত্মত্যাগ।
- লক্ষ্মণের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া: উর্মিলা ও লক্ষ্মণ একটি চুক্তি করেন যে, লক্ষ্মণ ১৪ বছর জেগে থেকে রাম ও সীতার সেবা করবেন এবং সেই জেগে থাকার সময়টুকু উর্মিলা তার নিজের ঘুম থেকে গ্রহণ করবেন।
- কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠা: লক্ষ্মণের অনুপস্থিতিতে উর্মিলা তার স্বামীর প্রতি ভালোবাসার জন্য এবং রাম, সীতা ও লক্ষ্মণের প্রতি তার কর্তব্যের খাতিরে এই আত্মত্যাগ করেন।
- নিদ্রা দেবীর ভূমিকা: কিংবদন্তি অনুসারে, নিদ্রা দেবী লক্ষ্মণের কাছে আসেন এবং তার স্ত্রীর কাছে যেতে বলেন, কারণ লক্ষ্মণ তার ভাইকে সেবা করার জন্য সারাক্ষণ জেগে থাকতে পারতেন না। তাই, উর্মিলা লক্ষ্মণের জেগে থাকা সময়টি গ্রহণ করেন এবং ১৪ বছর ধরে ঘুমান।
- এই ঘটনার গুরুত্ব:
- উর্মিলা নিদ্রা: উর্মিলার এই দীর্ঘ নিদ্রাকে উর্মিলা নিদ্রা বলা হয় এবং এটি তার অতুলনীয় আত্মত্যাগের প্রতীক।
- অপ্রচলিত প্রেমের গল্প: এই ঘটনাটি উর্মিলা ও লক্ষ্মণের ভালোবাসার একটি অপ্রচলিত কিন্তু শক্তিশালী গল্প হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
- লোকগাথায় স্থান: যদিও এটি মূল রামায়ণ শাস্ত্রে উল্লেখ নেই, তবু এই গল্পটি সাধারণ মানুষকে এতটাই প্রভাবিত করেছে যে এই দম্পতিকে নিয়ে অনেক মন্দির তৈরি হয়েছে এবং এটি লোককথা ও ঐতিহ্যবাহী রামকথার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।