বাংলার বেশিরভাগ প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অধিকাংশই জমিদার বাড়ির পুজো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সমস্ত পুজো হয় তাদের জৌলুস হারিয়েছে অথবা বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু ঐতিহ্যকে এখনও ধরে রেখেছে উঃ ২৪ পরগনার ইছামতির তীরের পুবের বাড়ির পুজো। টাকির প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে পুবের বাড়ির দুর্গাপুজো। এক সময়ের জমিদারবাড়ি আজ ভগ্নপ্রায়, তবুও তার খিলানবদ্ধ পুরনো দুর্গাদালান, খসে পড়া পলেস্তারা ও দেওয়ালের গায়ে এখনও জমিদারি মেজাজের ছাপ স্পষ্ট। অযত্নের ছোঁয়া থাকলেও ঐতিহ্যের গৌরব আজও ধরে রেখেছে এ বাড়ি। টাকির জমিদারবাড়িগুলির মধ্যে একমাত্র এই পুবের বাড়িতেই এখনও দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়।
পুরোনো কাঠামো বজায় রেখেই বাড়িটি নতুনভাবে ঝাঁ-চকচকে রূপে সেজেছে। এই বাড়ির পুজো তাই স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছেও বিশেষ আকর্ষণীয়। অষ্টমীর দিনে এখানে ভোগ খেতে ভিড় জমে। বিসর্জনের দিন আজও প্রথা মেনে প্রতিমা ২৪ জন বেয়ারার কাঁধে চেপে নিয়ে যাওয়া হয় টাকির রাজবাড়ি ঘাটে। তারপর শহরের অন্যান্য মণ্ডপ থেকে প্রতিমা বেরোয়। এক সময় এই বাড়ির নবমী পুজোর দিনে বন্দুকের টোটা ফাটিয়ে মহিষ বলির প্রথা ছিল। আজ আর সেই দিন নেই, নেই জমিদাররাও। তবুও টাকি আছে, আর টাকির জমিদারবাড়ির পুজোর গৌরব আজও অটুট। এখনও প্রথা মেনে দুর্গাদালানেই কাঠামো পুজো হয়।