এখন তো মহালয়া থেকেই পুজো শুরু। এমন কি মুখ্যমন্ত্রী পিতৃপক্ষেই পুজোর উদ্বোধন করে দেন। কলকাতার বড়ো বড়ো পুজোগুলো তাদের পুজোকে সাজিয়ে তুলেছে নানা থিমে। আজ দ্বিতীয় পর্বে তেমন কিছু উল্লেখযোগ্য থিম –
- আলিপুর সার্বজনীন: চা-পান-উতার-
চা এখানে দর্শনে পরিণত হয়েছে। অনির্বাণ প্যান্ডেলওয়ালার পরিকল্পনায় এই থিমটি চায়ের আবিষ্কার, পৌরাণিক কাহিনী এবং সংস্কৃতি উদযাপন করে, একই সঙ্গে স্বীকার করে যে এই কোমল পাতাই কীভাবে যুদ্ধ, ঔপনিবেশিক বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। - টালা প্রত্যয়ের শতবর্ষ: সভ্যতার বীজ
এই বছরের সবচেয়ে প্রত্যাশিত প্যান্ডেলগুলির মধ্যে একটি হল তালা প্রত্যয়, যার ১০০তম বর্ষ উদযাপন করা হচ্ছে বীজ অঙ্গন থিম নিয়ে। শিল্পী ভবতোষ সুতারের ধারণা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক প্রদত্ত এই স্থাপনাটি বীজকে রূপক এবং স্মৃতিস্তম্ভ উভয় হিসাবেই বিবেচনা করেছে। একটি বীজের মধ্যে সভ্যতার সুপ্ত সারাংশ লুকিয়ে থাকে- ধারাবাহিকতা, বেঁচে থাকা এবং ভবিষ্যত জীবনের প্রতিশ্রুতি মিশে থাকে। টালা প্রত্যয়ের শতবর্ষের থিমটি কীভাবে বীজ এক বাস্তুতন্ত্র এবং দর্শনকে টিকিয়ে রাখে তা তুলে ধরে।
- বেহালা ফ্রেন্ডস: নবান্ন – ক্ষত, যুদ্ধ এবং ক্ষুধা
যুদ্ধ এখন আর দূরের যুদ্ধক্ষেত্র নয়; এটি ঘরে ঘরে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। শিল্পী প্রদীপ দাস কীভাবে দুর্ভোগের অন্তহীন ফুটেজ আমাদের সহানুভূতিকে ম্লান করে দিয়েছে সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এই প্যান্ডেলের মাধ্যমে দর্শকরা যুদ্ধের দৃশ্য এবং এর অদৃশ্য পরিণতির মুখোমুখি হবেন।
- সন্তোষপুর লেকপল্লী: জলচিত্র (ওয়াশ)
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রবর্তিত বেঙ্গল স্কুলের ওয়াশর কৌশলটি এখানে অনির্বাণ দাস পুনরুজ্জীবিত করেছেন। স্তর স্তরে জলরঙের মাধ্যমে প্যান্ডেলটি এমন একটি শিল্পরূপকে সম্মান জানায় যা একসময় ভারতের সাংস্কৃতিক নবজাগরণকে সংজ্ঞায়িত করেছিল, কিন্তু এখন স্মৃতি থেকে মুছে যাচ্ছে।