উত্তর কলকাতার দমদমে, দেবীনিবাস রোডে আছে দেবী বগলামুখীর মন্দির। দশম মহাবিদ্যার অষ্টম মহাবিদ্যা দেবী বগলামুখী। ভক্তদের বিশ্বাস শতবর্ষ প্রাচীন এই দেবীর মন্দির অত্যন্ত জাগ্রত। মনস্কামনা পূরণের পাশাপাশি, বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্যও দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে ছুটে আসেন। কীভাবে যাবেন এই মন্দিরে? দমদম স্টেশনে নেমে নাগেরবাজারগামী অটো বা বাসে চেপে মতিঝিল গার্লস স্কুলের সামনে নামতে হবে। সেখানে রাস্তা পার হয়ে বাসন্তী সুইটস। সেখান থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটাপথ। কথিত আছে সতী যখন মহাদেবের কাছে তাঁর পিতৃগৃহে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন, তখন মহাদেব তাঁকে অনুমতি দেননি। ক্ষুব্ধ দেবী সতী তাঁর ১০টি রুদ্র রূপের মাধ্যমে সেই সময় মহাদেবকে ঘিরে ধরেন। তাঁকে ভয় দেখিয়েছিলেন।
এই ১০টি রূপের প্রতিটি মহাবিদ্যা নামে খ্যাত। একশো বছর আগে রাধিকাপ্রসাদ সান্যাল স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্বপ্নাদেশে তিনি জানতে পেরেছিলেন যেখানে আজ মন্দির, তার মাটির নীচে দেবীমূর্তি রয়েছে। এরপর তিনি মাটি খুঁড়িয়ে সেখান থেকে দেবীর মূর্তিটি উদ্ধার করেন। এখানে প্রতিদিন দেবীর অন্নভোগ হয়। অন্নভোগ হয় একবেলা। সন্ধ্যায় দেওয়া হয় মিষ্টি ও ফল। তন্ত্র অনুযায়ী দেবী বগলা ভক্তের মানসিক ভ্রান্তিনাশের দেবী। অনেকে দেবী বগলাকে শত্রুনাশের দেবীও বলে থাকেন। দেবীর অস্ত্র হল মুগুর বা গদা। দেবী বগলার ভাবগত অর্থ হল, যিনি কোনও কিছুর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নিতে সক্ষম। দেবী বগলাকে উত্তর ভারতীয়রা পীতাম্বরী বা ব্রহ্মাস্ত্ররূপিণীও বলে থাকেন। তন্ত্রমতে, দেবী যে কোনও দোষকে গুণে পরিণত করতে পারেন। যেমন তিনি বাক্যকে স্তবে, অজ্ঞানকে জ্ঞানে, শক্তিহীনতাকে শক্তিতে আর পরাজয়কে জয়ে পরিবর্তন করতে সক্ষম।