চাণক্য, আসল নাম ছিল কৌটিল্য। কূটনীতিক এবং রাজনীতিক হিসাবে তাঁর থেকে সফল যদি কেউ থেকে থাকেন তাহলে সেটা বোধহয় মহাভারতের শ্রীকৃষ্ণ ছাড়া আর কেউ নয়। তাঁর নীতি ও ধারণা আজও জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কার্যকর। বিশেষ করে যখন জীবনে সাফল্য অর্জনের প্রয়োজন থাকে অথবা যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয় তখন তাঁর থেকে ভাল রণ কৌশল আর কেই বা জানেন? যুদ্ধের সময় বেশ কিছু নীতি মেনে চলার কথা বলে গিয়েছেন চাণক্য। যা আজও যে কোনও শাসক বা নেতার পথপ্রদর্শক হতে পারে। চাণক্য তাঁর নীতিতে কেবল সামরিক শক্তির গুরুত্বই নয়, বরং বুদ্ধিমত্তা, কূটনীতি এবং সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্বও ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর বিশ্বাস, যুদ্ধে কেবল শারীরিক শক্তি দিয়েই নয়, বরং প্রজ্ঞা, পরিকল্পনা এবং সঠিক কৌশল দিয়েও জয়লাভ করা সম্ভব।
চাণক্য সবসময় বলতেন, কখনও নিজের শত্রুকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। তার কৌশলকে পরাস্ত করতে শত্রুর শক্তি এবং দুর্বলতা বোঝাটা গুরুত্বপূর্ণ। শত্রুকে পরাজিত করার সর্বোত্তম উপায় হল সঠিক সময়ে শত্রুর দুর্বলতা কাজে লাগানো। যাতে তাকে সহজেই পরাজিত করা যায়। চাণক্যের মতে, যুদ্ধ জিততে হলে চারটি পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। যখন যেটা প্রয়োজন। ‘সাম’ অর্থাৎ শান্তিপূর্ণভাবে রাজি করানো। ‘দাম’ অর্থাৎ প্রলোভন দেখানো। ‘দণ্ড’ অর্থাৎ শাস্তি দেওয়া এবং ‘ভেদ’ অর্থাৎ শত্রুকে বিভক্ত করা। এই চারটিই সঠিক সময়ে ব্যবহার করা উচিত। চাণক্য যুদ্ধকে প্রথম বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করেননি। চাণক্য বিশ্বাস করতেন যে যুদ্ধ তখনই করা উচিত যখন অন্য কোনও বিকল্প অবশিষ্ট থাকে না। যদি সংলাপ বা আপসের মাধ্যমে কোন সমস্যার সমাধান করা যায়, তাহলে যুদ্ধ এড়ানো উচিত। তবে, যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, তখন যুদ্ধের পথ অবলম্বন করতেই হবে।