সাধারণত শিবলিঙ্গ পাথরের হয়। ফাল্গুন মাসের শিবরাত্রিতে এই শিবলিঙ্গের মাথায় আমরা জল ঢালি। তবে পুরান মতে নিজের হাতে মাটি দিয়ে শিবলিঙ্গ বানিয়ে তাকেও পুজো করা যায়। দুটো রীতিই কিন্তু বৈধ। শিব পুরাণ অনুসারে পার্থিব শিবলিঙ্গ অর্থাৎ, মাটির শিবলিঙ্গ বানিয়ে তাঁকে পুজো করতে পারেন। বিশেষ করে যদি কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য সফল করতে চান তাহলে এই পার্থিব শিবলিঙ্গে পুজো করতে পারেন। বিশ্বাস এতে মোক্ষ লাভ করা যায়। অন্য সমস্ত লিঙ্গের মধ্যে পার্থিব শিব লিঙ্গকে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যুগে যুগে বিভিন্ন ধরনের লিঙ্গের গুরুত্ব বেড়েছে। যেমন সত্যযুগে রত্ন, ত্রেতা যুগে স্বর্ণ, দ্বাপর যুগে পারদ তেমনই এই কলিযুগে পার্থিব শিব লিঙ্গের গুরুত্ব সর্বাধিক।
মনে করা হয় পার্থিব শিব লিঙ্গের পুজো ধন, বৈভব, আয়ু ও অর্থ প্রদান করে। এই শিব লিঙ্গের পুজো করলে সিদ্ধিলাভ সম্ভব। যেভাবে খুশি মাটি দিয়ে পার্থিব শিব লিঙ্গ তৈরি করলেই কিন্তু হল না। পার্থিব শিব লিঙ্গ বানানোর কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। কী ভাবে বানাবেন? দেখে নিন। শিব পুরাণ অনুযায়ী কোনও নদী, পুকুরের ধারে, পর্বত বা জঙ্গলে, শিবালয়ে বা অন্য কোনও পবিত্র স্থানে পার্থিব লিঙ্গের পুজো করা উচিত। পবিত্র স্থানের মাটি দিয়েই শিবলিঙ্গ নির্মাণ করা উচিত। পুরাণ অনুযায়ী ব্রাহ্মণদের সাদা মাটি, ক্ষত্রিয়দের লাল মাটি, বৈশ্যদের হলুদ মাটি এবং শূদ্রদের কালো মাটি দিয়ে শিবলিঙ্গ তৈরি করা উচিত। পবিত্র স্থানের মাটিতে গঙ্গাজল ছিটিয়ে তারপর সেই মাটি দিয়ে শিবলিঙ্গ তৈরি করতে হবে। শেষে সেই শিবলিঙ্গের মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।