কলকাতা হাইকোর্টের কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর বিতর্কে হাই কোর্টের আরেক বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ। সোমবার তাঁর অবসরকালে আরএসএস ঘনিষ্ঠতার কথা প্রকাশ্যে আনেন তিনি। বলেন, একটা সময় তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) (আরএসএস) সদস্য ছিলেন। যা ফের বিতর্ক বাড়িয়েছে বলেই মত আইনজীবী মহলের। সম্প্রতি হাই কোর্টের এক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিজেপি ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ্যে আসে। বর্তমানে তিনি তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) প্রার্থী। এবার হাই কোর্টের (Calcutta Highcourt) আরও এক বিচারপতির প্রকাশ্যে আরএসএস ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৫ সালে কটকের মধুসূদন ল’ কলেজ থেকে আইন নিয়ে স্নাতক হয়েছিলেন বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ (Justice Chittaranjan Dash) । পরে নন-কলেজিয়েট পড়ুয়া হিসেবে উৎকল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছিলেন। সেই থেকে আইনজীবী হিসেবে কর্ম জীবন শুরু। পরে ২০০৯ সালের অক্টোবর ওড়িশা হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে কাজে যোগ দেন। ২০২২ সালের জুন মাসে সেখান থেকে বদলি হয়ে কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। হাই কোর্টের বিচারপতি তাঁর কর্মজীবনের শেষ দিন ছিল সোমবার।

হাই কোর্টে বিদায়ী অনুষ্ঠান বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজের আরএসএস ঘনিষ্ঠতার কথা প্রকাশ্যে আনেন তিনি নিজেই। বলেন, “আজ আমি নিজের ব্যক্তিসত্তার কথা বলতে চাই। আমি একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। শৈশব থেকে যৌবন পর্যন্ত সেখানে ছিলাম আমি। সাহসী, ন্যায়পরায়ণ, অন্যদের সমান চোখে দেখা, সর্বোপরি দেশপ্রেম এবং যেখানেই কাজ করি না কেন, সেখানে নিজের সবটা উজাড় করে দেওয়ার বিষয়টি শিখেছিলাম। আমার অবশ্যই এখানে স্বীকার করে নেওয়া উচিত যে আমি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সদস্য ছিলাম।”
তবে তিনি এও বলেছেন, “যে ৩৭ বছর আগে আরএসএসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে যখন বিচারব্যবস্থার অংশ হয়ে ওঠেন, তখন আরএসএস ছেড়ে দেন।” তিনি জানান, নিজের কেরিয়ারে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কখনও সেই প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেননি। আর কাউকে আলাদা চোখে দেখেননি। তাঁর কথায়, “আপনারা নিশ্চিতভাবে দেখেছেন যে কোনও ব্যক্তির হয়ে পক্ষপাতিত্ব করিনি। কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শ বা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষপাতিত্ব করেননি।” সবকিছুর ঊর্ধ্বে তাঁর কাছে বিচারব্যবস্থা ছিল বলে জানান বিচারপতি দাশ।