পূর্ব ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যটি তার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জন্য প্রসিদ্ধ, যা এর বিভিন্ন বিখ্যাত মন্দিরে প্রতিফলিত হয়। ভক্তি, স্থাপত্য এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বে ভরপুর এই মন্দিরগুলো শুধু দর্শনীয়ই নয়, এগুলো আমাদের নিয়ে যায় এক আধ্যাত্মিক ভ্রমণে। এমন ৫টি মন্দির হলো –
১) বৈদ্যনাথ ধাম – ঝাড়খণ্ডের সবচেয়ে প্রাচীন মন্দিরগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো দেওঘরের বৈদ্যনাথ ধাম। এটি ভারতে অবস্থিত ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের (পবিত্র শিব মন্দির) একটি, যা হিন্দু ভক্তদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী, যার মধ্যে ২২টি ছোট মন্দির অন্তর্ভুক্ত, পাথর ও তামার কাজে মুগ্ধ করে।
২) জগন্নাথ মন্দির, রাঁচি – রাঁচির জগন্নাথ মন্দিরটি ১৭শ শতকে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি ওড়িশার পুরীর বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দিরের প্রতিরূপ। এই মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী, জটিল খোদাই ও সুউচ্চ চূড়া বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এটি ভগবান জগন্নাথকে উৎসর্গ করা হয়েছে, যিনি কৃষ্ণের একটি রূপ। প্রতিবছর রথযাত্রা উৎসবের সময় মন্দিরটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, যেখানে ভক্তরা দেবতাদের বহনকারী রথের শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
৩) পাহাড়ি মন্দির, রাঁচি – রাঁচির সবুজ পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত পাহাড়ি মন্দির ভগবান শিবকে উৎসর্গীকৃত একটি বিখ্যাত তীর্থস্থান। মন্দিরটি তার নির্মল পরিবেশ এবং মনোরম স্থাপত্যশৈলীর জন্য পরিচিত। এখান থেকে রাঁচি শহরের অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করা যায়। পাহাড়ি মন্দিরে উঠতে ৪৬৮টি ধাপ পার হতে হয়, যা ভক্তিমূলক যাত্রার একটি অংশ হিসেবে গণ্য হয়।
৪) সূর্য মন্দির, বুন্দু – ঝাড়খণ্ডের এদালহাতু গ্রামে অবস্থিত সূর্য মন্দিরটি স্থাপত্যের দিক থেকে এক বিস্ময়। মন্দিরটি একটি বিশাল রথের আকারে নির্মিত, যা সূর্য দেবতাকে উৎসর্গীকৃত। মন্দিরের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং মন্দিরের নিখুঁত কারুকাজ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। প্রতি বছর এখানে সূর্য মন্দির মেলা অনুষ্ঠিত হয়, যা ঝাড়খণ্ডের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক অনন্য উদযাপন। এই মেলা দূর-দূরান্ত থেকে বহু ভক্তকে আকর্ষণ করে।
৫) ছিন্নমস্তা মন্দির – রাঁচি –
হিন্দু পুরাণ এবং ধর্মীয় বইয়ে ছিন্নমস্তা মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া যায়। রাঁচি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে দামোদর ও ভৈরভি নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত এই মন্দিরটি মাতা ছিন্নমস্তাকে উৎসর্গ করা হয়েছে, যিনি প্রচণ্ড চন্ডিকা নামেও পরিচিত।
