২ নভেম্বর ভারতের ক্ষেত্রে ‘উদ্বেলিত নারীদিবস’ বলা যায়। অসাধারণ সাফল্য এনে দিয়েছে ভারতের মহিলা দল। মন্ত্রীমুগ্ধ হয়ে খেলা দেখেছেন কয়েক কোটি ভারতবাসী। নাদিন ডি ক্লার্কের ক্যাচটা হরমনপ্রীত তালুবন্দি করার সঙ্গে সঙ্গে এই প্রশ্নটাই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তার আগে লরা উলভার্টের ক্যাচ বাউন্ডারি লাইনে নিলেন অমনজ্যোত কৌর। সেটাই টার্নিং পয়েন্ট। তাদের অধিনায়কের আউটের পরই যেন ললাট লিখন পড়ে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এক ক্যাচেই বিশ্বজয়ের কাহিনি যেন ভারতীয় ক্রিকেটের চার দশকের সাক্ষী। ১৯৮৩-র কপিল দেব, ২০২৪-এর সূর্যকুমার যাদব, ২০২৫-এর আমনজ্যোত যেন তিন প্রজন্মকে একসূত্রে বেঁধেছেন। তিনজন ভারতকে বিশ্বের মানচিত্রে এক নম্বর জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে।
৮৩-র ২৫ জুন। দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জেতে কপিল দেবের ভারত। সেবারের ফাইনালে ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ভিভ রিচার্ডসের অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিয়েছিলেন কপিল দেব। মদনলালের বলটা তুলে মেরেছিলেন ভিভ। আকাশে উঠে যাওয়া বলটার দিকে তাকিয়ে দৌড় শুরু কপিলের। প্রায় ৩০ গজ দৌড়ের পর ক্যাচের সেই অত্যাশ্চর্য মুহূর্ত! ভিভ আউট হওয়ার ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র ১৯ রানে পরের তিনটি উইকেট হারায়। ম্যাচের চিত্রনাট্যও বদলে যায়। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। লর্ডসের বারান্দায় ট্রফি হাতে তোলেন কপিল।
২০২৪ সালের ২৯ জুন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল। বিশ্বজয় আর ভারতের মাঝে দাঁড়িয়ে ডেভিড মিলার। এক ওভারে মাত্র ১৬ রান পুঁজি। মিলারের মতো ব্যাটারের পক্ষে যা মোটেই অসম্ভব নয়। হার্দিক পাণ্ডিয়ার প্রথম বলই শূন্যে ভাসিয়ে দিলেন বাঁ-হাতি প্রোটিয়া ব্যাটার। বল ছুটল বাউন্ডারির দিকে। ছুটলেন আরেকজন সূর্যকুমার যাদব। লং অন থেকে বাউন্ডারির দিকে। বল লুফে নিলেন বটে, কিন্তু নিজের গতি নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে! এক চুল এদিক ওদিক হলেই তো উইকেটের বদলে স্কোরবোর্ডে লেখা হবে ছক্কা। সেই সঙ্গে সম্ভবত ট্রফিতেও লিখে ফেলা হবে দক্ষিণ আফ্রিকার নাম। কিন্তু সূর্য একচুলও এদিক-ওদিক হলেন না। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলেন। বাউন্ডারির বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগে বল উড়িয়ে দিলেন। সীমানার ভিতরে প্রত্যাবর্তন করে ফের লুফে নিলেন সেই বল। মুহূর্ত যেন থেমে গেল। ওই মুহূর্তেই যেন ট্রফিতে লেখা হল ভারতের নাম।
