খবরে আমরাঃ যখন নারীবাদের কথা বিন্দুমাত্র জানা ছিল না পৃথিবীর, সেই সময় নিজেদের কাজে নারীবাদকেই প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন সীতা ও দ্রৌপদীর মতো চরিত্র। রামায়ণ ও মহাভারতের এই নারীরাই প্রথম নারীবাদী। একটি আলোচনা চক্রে এমন মন্তব্যই করলেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তিশ্রী ডি পণ্ডিত। শুক্রবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আলোচনা চক্রে অংশগ্রহণ করেন জেএনইউ উপাচার্য। যেখানে আলোচনার বিষয় ছিল ‘স্বরাজ থেকে নতুন ভারত’। সেখানেই তিনি বলেন, “দ্রৌপদী ও সীতার থেকে কে বেশি নারীবাদী?” উল্লেখ করেন, মহাভারতে দ্রৌপদী যে ভাষায় স্বামীদের যোগ্য জবাব দিয়েছেন, রামায়ণে সীতা যেভাবে স্বামীকে ছাড়াই সন্তানদের মানুষ করেছেন তা নারীবাদী ভাবনারই উদাহরণ। শান্তিশ্রীর কথায়, “সীতাই প্রথম সিঙ্গল মাদার”।
এদিন ভারতের সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ নিয়েও সওয়াল করেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে বিস্মৃত স্বাধীনতা সংগ্রামী, মহাত্মা গান্ধী, চোল রাজবংশ ও মুঘল আমলের প্রসঙ্গ টানেন উপাচার্য। বলেন, “ভারত শুধু তার স্বাধীনতা পরবর্তী সংবিধানের মধ্যেই আবদ্ধ নয়। তার স্বাধীনতা পূর্ববর্তী একটি দীর্ঘ সাংস্কৃতিক সভ্যতাও রয়েছে।” উপাচার্য আরও বলেন, ভারত ও চিন এই দু’টি দেশের দীর্ঘ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্ত চিনের সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদকে অসাম্প্রদায়িক আর ভারতের বেলায় তাকে সাম্প্রদায়িক বলে দেগে দেওয়া হয়।” একজন দক্ষিণ ভারতীয় হিসেবেও নিজের বেদনাবোধ প্রকাশ করেন জেএনইউর উপাচার্য। বলেন, “ভারতে দীর্ঘতম শাসনকাল ছিল চোল রাজবংশের। কিন্তু মহান চোল সম্রাটদের কথা কোথাও উল্লেখ করা হয়? এতদিনে দিল্লির কোনও রাস্তা তাঁদের নামে হয়েছে?”
উল্লেখ্য, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আলোচনা সভায় বৃহস্পতিবার অংশ নিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও শিক্ষা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। সেই মঞ্চেই ভারতীয় সভ্যতা তথা সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ নিয়ে বস্তুত গেরুয়া শিবিরের পক্ষেই মতামত ব্যক্ত করলেন জেএনইউ উপাচার্য শান্তিশ্রী ডি পণ্ডিত।