কয়লা পাচার কাণ্ডে এবার সিবিআইয়ের নজরে আসানসোলের তৃণমূল নেতা অনুপ মাঝি। ইনি বর্তমানে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। এই কয়লা পাচারের উৎসমূলে যেতে গিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Avishek Banerjee) একাধিক বার জেরা করেছে। তলব করা হয়েছে শিল্পাঞ্চলের তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে (Moloy Ghatak)। কিন্তু শিল্পাঞ্চলের কয়ালা পাচারের বেতাজ বাদশা লালাকে ঘেরাটোপে রাখার পাশাপাশি এবার এই অনুপ মাঝিকে নিয়ে খোঁজ খবর শুরু হয়েছে।
যদিও তৃণমূল ও বিজেপির একাংশের মতে মলয় ঘটককে নিছক চাপে রাখতেই সিবিআই-ইডি কয়লা পাচারের অভিযোগে জেরা চালিয়ে যেতে চায়। কারণ, তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন মলয়। নীরবে থেকে তৃণমূলের একের পর এক কঠিন সময় তাঁর হাত ধরেই সামাধানের পথ পেয়েছে। আসানসোলে তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। আসানসোল আসনে বিজেপিকে আনতে গেলে সবচেয়ে বড় বাধা মলয়। তাঁই তাঁকে আপাতত চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।
সিবিআই (CBI) জানতে পেরেছে, দীর্ঘ দশক ধরে শিল্পাঞ্চলের লোহা পাচারের সঙ্গে অলোক জড়িত রয়েছে। তার বাবা সাধন মাঝি একদা এই ব্যবসা শুরু করেন। ইসকোর (IISCO) দেওয়াল ভেঙে সেখান থেকে লোহার ছাঁট মাল চুরি করে তা বিক্রি ও পাচারের বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। সেই সূত্রে নাম আসে ইমতিয়াজদের। লোহা চুরিতে প্রথম সারিতেই তাঁর নাম। সিবিআইয়ের দাবি এই ইমতিয়াজই শিল্পা্চলের লোহা চুরি নিয়ন্ত্রণ করেন।
সিবিআই তদন্তে জানতে পেরেছে এখনও আসানসোলের পুরুষোত্তমপুর, নাগরাসোঁতা এলাকায় ইসকোর সীমানা দিয়ে লোহা চুরি করে তা পাচার চালিয়ে যাচ্ছেন অলোক (Alok Maji) ও তাঁর দলবল। সেই টাকায় ফুলে ফেঁপে উঠেছে তাঁর সাম্রাজ্য। এই পাচারের কিংপিংরাই কয়লা পাচারের অন্যতম চাঁই। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের মতে, ২০১৫ সালেই এই অনুপ শাসকদল তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে পরিস্থিতির কেন এমন পরিবর্তন যে অলোককে ব্লক সভাপতি করতে হল।
সিবিআইয়ের একটি সূত্র দাবি করেছে, অনুব্রত মন্ডলকে (Anubrata Mandal) গরু পাচার (Cattle Smuggling) কাণ্ডে ধরার পড়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন অনুপ। সেদিন আসানসোল আদালতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। জেলেও দুই নেতার মধ্যে কথোপকথন হতে পারে বলে তদন্তকারীদের অনুমান।
এবার এই অনুপকে নিজেদের হাতে পেতে চায় সিবিআই। তাঁর কাছ থেকেই শিল্পাঞ্চলের কয়লা পাচারের সঙ্গে যুক্তদের নাম পাওয়া যাবে বলে তদন্তকারীদের ধারণা। এদিকে দলের ্ন্দরেই এি অনুপকে নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। একদা তৃণমূেলর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এই নেতা কীভাবে সদ্য তৃণমূলের দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ব্লক প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত হতে পারেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। তৃণূলের একাংশের আরও অভিযোগ, লোহা চুরিতে মদত ও সরাসরি জড়িতে এই ব্যক্তি কীভাবে দলের সম্পদ হয়ে উঠতে পারেন তা নিয়েও। পুরুষোত্তমপুর ও নাগরাসোঁতা এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, নিযমিত দেওয়াল কেটে ইসকোর লোহা বাইরে পাচার করে বড় অংকের টাকা তুলছেন এি অনুপ। তাঁকেই শাসকদল পদে বসানোয় ক্ষোভ চরমে।