এবার জ্যোতিষশাস্ত্র (Astrology) পড়াবে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের প্রথম কোনও বিশ্বিদ্যালয় সরকারিভাবে এই কোর্স চালুর উদ্যোগ নিল। দেশ জুড়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদীদের প্রশ্য় দেওয়া অভিযোগ নিযে সরগরম রাজনীতি তখন এই পদক্ষেপ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
শিক্ষায় গৈরিকরণের পথে বেশ কয়েক ধাপ এগোল কেন্দ্র। এবার এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে (Allahabad University) পড়ানো হবে জ্যোতিষশাস্ত্র এবং হিন্দু আচার-অনুষ্ঠান (Hindu) সংক্রান্ত একাধিক কোর্স (Academik Course)। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে কোর্স দু’টি পড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছে, বৈদিক অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে কোর্স দু’টি পড়ানো হবে বলে। নতুন কোর্সগুলির মধ্যে ধর্মীয় অনুশীলন, আচার এবং জ্যোতিষশাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকেই নতুন কোর্সগুলি চালু করার ইঙ্গিত দেন।
বিশ্ববিদ্যালেয়র ওই মুখপাত্র আরও বলেন যে প্রথমে দু’টি পিজি ডিপ্লোমা এবং একটি পিজি কোর্স চালু করা হবে। আর এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। সেন্টার ফর বৈদিক অধ্যয়নের অধীনে হিন্দু আচার-অনুষ্ঠানের ডিপ্লোপা কোর্স পড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রাম সেবক দুবে। এটি হবে এক বছর মেয়াদি কোর্স। আর এই কোর্সে ভর্তি হওয়ার ন্যুনতম যোগ্যতা হল যে কোনও বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি। সেই সঙ্গে জ্যোতিষশাস্ত্রে ডিপ্লোমাও এক বছরের হবে এবং পরে যা ইউজি কোর্সও করা যেতে পারে বলে জানান।
এছাড়া বুদ্ধিবৃত্তিক অধ্যয়নে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করার প্রস্তাব রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্কৃত বিভাগের প্রধান। আর এটি হবে দুই বছরের মাস্টার্স ডিগ্রি প্রোগ্রাম। আর এই কোর্স করার জন্য স্নাতক পর্যায়ে একটি বিষয় হিসেবে সংস্কৃত থাকা বাধ্যতামূলক।
তিনটি কোর্স পরিচালনার প্রস্তাব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃত বিভাগের প্রধান রাম সেবক দুবে। এরপর প্রস্তাবটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন।
আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিষদ (ইসি)-র চূড়ান্ত অনুমোদনের পর কোর্সটি চালু করা হবে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হবে। এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই জ্যোতিষশাস্ত্র আর আচার-অনুষ্ঠানের কোর্স করার পর শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে দাবি করেছেন সংস্কৃত বিভাগের প্রধান।
কেন্দ্রে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো শিক্ষায় গৈরিকরণের চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন শিক্ষাবিদদের একাংশ। বর্তমানে নতুন শিক্ষানীতির প্রতিবাদ জানিয়েছে তাঁরা। এমন এক পরিস্থিতিতে যোগী রাজ্যে নতুন করে জ্যোতিশাস্ত্র ও হিন্দু আচার-অনুষ্ঠান সংক্রান্ত কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।